ভারতীয় সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে ১৯ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও। শিশুদের চিকিৎসায় আপাতত ওই সিরাপ দিতে নিষেধ করেছে সংস্থাটি। ডব্লিউএইচওর সুপারিশ, ভারতীয় কোম্পানি ম্যারিওন বায়োটেকের তৈরি দুটি কাশির সিরাপ উজবেকিস্তানের শিশুদের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়। খবর এনডিটিভির।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করে ভারতীয় কোম্পানির তৈরি সর্দি-কাশির সিরাপ খেয়ে ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২১ জনের মধ্যে ১৮ শিশু ম্যারিওন বায়োটেকের ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ খেয়েছিল। তারপরই তীব্র শ্বাসকষ্টে তাদের মৃত্যু হয়। সর্দি ও ফ্লুর উপসর্গের চিকিৎসা হিসেবে কোম্পানির ওয়েবসাইটে এটি বাজারজাত করা হয়।
জানা যায়, কুয়ারাম্যাক্স মেডিকেল এলএলসি নামে একটি কোম্পানি উজবেকিস্তানে এই সিরাপ আমদানি করেছিল। ওষুধটির একটি ব্যাচে ইথিলিন গ্লাইকল পাওয়া গেছে, মধ্য এশিয়ার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যাকে বিষাক্ত উপকরণ বলছে।
১৮ শিশুর মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাড়িতে শিশুদের ওই সিরাপ সেবন করতে দেয়া হয়েছিল, হয় তাদের বাবা-মা বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শে। এটি পরিষ্কার নয় যে, সব শিশু স্ট্যান্ডার্ড ডোজের চেয়ে বেশি গ্রহণ করেছে কিনা। এ ঘটনায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া বা অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট ৭ জনকে বরখাস্ত করেছে।
এক সতর্কবার্তায় ডব্লিউএইচও বুধবার (১১ জানুয়ারি) জানিয়েছে, ম্যারিওন বায়োটেকের তৈরি দুটি কাশির সিরাপ হলো অ্যাম্ব্রনল সিরাপ এবং ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ। ল্যাবরেটরি পরীক্ষা দেখা গেছে, দুটি ওষুধে খুব বেশি পরিমাণে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করে বলেছে, ম্যারিওন বায়োটেকের তৈরি ওষুধ সাবস্ট্যান্ডার্ড মেডিক্যাল প্রোডাক্টস। এই ওষুধ গুণগতমান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এগুলো নিরাপদ নয়। এই দুই ওষুধের ব্যবহারে শিশুরা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এবং এতে মৃত্যুর শঙ্কাও রয়েছে।
উজবেকিস্তানে ১৯ শিশু মৃত্যুর সঙ্গে ওই কাশির সিরাপের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউওএইচও। এর আগে গামিবিয়ায় ৬৬ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় একটি সংস্থার ৪টি কাশির সিরাপকে দায়ী করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।