সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসর চোখ কপালে তোলা এক চুক্তিতে দলে ভিড়িয়েছে পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। তবে, পর্তুগিজ মহাতারকাকে হয়ত দেখা যেতে পারত ব্রাজিলিয়ান ফুটবল লিগে। তাকে দলে ভেড়ানোর লড়াইয়ে ছিল দেশটির অন্যতম সেরা ক্লাব করিন্থিয়ান্স। তবে, আল নাসরের অর্থের ঝনঝনানির সামনে পেরে ওঠেনি তারা। করিন্থিয়াসের চেয়ে ২০ গুণ বড় প্রস্তাবে তাকে দলে ভেড়ায় সৌদি ক্লাবটি।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে চুক্তি ছিন্ন করলে দলহীন হয়ে পড়েছিলেন রোনালদো। সে সময়ই শঙ্কা জেগেছিল -হয়ত পর্তুগিজ তারকাকে শীর্ষ লিগের ফুটবলে দেখা যাবে না আর। শঙ্কা সত্যি হয় গত বছরের শেষ দিনে। তাক লাগানো পারিশ্রমিকে সৌদি প্রো লিগের দল আল নাসরে যোগ দেন ৩৭ বছর বয়সী রোনালদো। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী দুই বছরের চুক্তি থেকে রোনালদো পাবেন ২০০ মিলিয়ন ইউরো।
তবে শুধু আল নাসর নয়, রোনালদোকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টায় ছিল আরও বেশ কয়েকটি দল। যার মধ্যে আছে ব্রাজিলিয়ান সিরি ‘আর দল করিন্থিয়ান্সও। সম্প্রতি দলটির সভাপতি জানিয়েছেন, রোনালদোকে দলে ভেড়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে কীভাবে ব্যর্থ মনোরথে ফিরতে হয়েছে তার দলকে।
করিন্থিয়ান্সের স্পোর্টিং ডিরেক্টর দুইলিও মন্তেইরো আলভেসের বরাত দিয়ে মার্কা জানায়, করিন্থিয়ান্স রোনালদোকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমান বেতন পর্যন্ত প্রস্তাব করেছিল কিন্তু তাতেও সম্ভব হয়নি ৩৭ বছর বয়সী তারকাকে দলে টানা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড় হিসেবে সপ্তাহে ৪ লাখ পাউন্ড করে পেতেন রোনালদো। তবে সৌদির ক্লাবটি তাকে এমন প্রস্তাব দেয় যার সামনে তা নিতান্তই সামান্য। ব্রাজিলের ক্লাবটির তার ধারেকাছে কোন অর্থ প্রস্তাব করারও সামর্থ্য ছিল না।
আলভেস বলেন, ‘আমরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। স্পন্সরদের সহায়তায় আমরা তাকে দুবছরের একটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, যাতে তাকে ইউনাইটেডে তার আয়ের সমান অর্থ প্রস্তাব করা হয়েছিল।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমি জানি, তার জন্য ইউরোপ থেকেও প্রস্তাব ছিল। তবে সৌদি আরবের প্রস্তাবটি ২০ গুণ বড় ছিল।’
শুধু ইউরোপ থেকেই নয়, ফ্যাব্রিজিও রোমানোর প্রতিবেদন অনুযায়ী মেজর সকার লিগের দল কানসাস সিটি থেকেও প্রস্তাব পেয়েছিলেন রোনালদো, যা তিনি নাকচ করে দেন। এই প্রস্তাবটিও যথেষ্ট লোভনীয় ছিল। এই প্রস্তাবে তিনি যা পেতেন তাতে ন্যাশনাল লিগ ফুটবলের প্যাট্রিক মাহোমেসকে ছাড়িয়ে তিনি সিটির সবচেয়ে বেশি আয় করা খেলোয়াড়ে পরিণত হতেন।
রোনালদো শেষ পর্যন্ত আল নাসরের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করেন, যা থেকে তিনি ২০০ মিলিয়ন ইউরো আয় করবেন। সেই সঙ্গে সৌদি আরবের ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের বিডের অ্যাম্বাসেডর হিসেবে আরও একটা বড় অঙ্কের অর্থ পাবেন তিনি।
আলভেস জানান, তিনি রোনালদোকে পেতে তার এজেন্ট হোর্হে মেন্দেসের সঙ্গে ছয় থেকে সাতবার কথা বলেন এবং শেষ পর্যন্ত তৃতীয় আরেক ব্যক্তির মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠায়।
তিনি হাসতে হাসতে বলেন, ‘আমি প্রস্তাবটা পাঠাই এবং তিনি সেটা গ্রহণ করবে এমনটা আশাও করিনি।’