‘লুকানো বিপদের’ শঙ্কায় দেশজুড়ে গ্যাসের চুলা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা চিন্তা করছে বাইডেন প্রশাসন। ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রান্নার চুলা থেকে সৃষ্ট ‘অভ্যন্তরীণ দূষণ’ নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ জানিয়েছে ইউএস কনজিউমার প্রোডাক্ট সেফটি (সিপিএসসি)।
সিপিএসসি কমিশনার রিচার্ড ট্রুমকা জুনিয়র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা (গ্যাসের চুলা) একটি লুকানো বিপদ। যে পণ্যগুলোকে নিরাপদ করা যায় না সেগুলো নিষিদ্ধ করা যেতে পারে।’
সংস্থাটি বলছে, গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত চুলাগুলো সাধারণত কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং সূক্ষ্ম কণার মতো দূষক পদার্থ নির্গমন করে। এসব পদার্থকে অনিরাপদ বলে বিবেচনা করে পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (ইপিএ) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিইএইচও)।
গবেষণা অনুসারে, বৈদ্যুতিক চুলার তুলনায় গ্যাসের চুলা দ্বিগুণ পিএম ২.৫ কণা তৈরি করে, যা গুরুতর শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা, হৃদ্রোগ এমনকি ক্যানসারের কারণও হতে পারে।
ক্লিন এনার্জির একজন বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গেরে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রায় ৫০ বছরের স্বাস্থ্য গবেষণায় দেখায গেছে যে, গ্যাসের চুলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ এবং এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো শিশুদের হাঁপানি।’
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫ শতাংশেরও বেশি পরিবার গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে। ক্যালিফোর্নিয়া এবং নিউ জার্সির মতো রাজ্যগুলোতে এ সংখ্যা আরও বেশি, যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ পরিবার গ্যাসের চুলা ব্যবহার করে।
ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, মার্কিন শিশুদের মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশের হাঁপানির জন্য গ্যাসের চুলা এবং এর বিষাক্ত ধোঁয়ার সংস্পর্শে আসা দায়ী।
এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ইতোমধ্যে সিপিএসসিকে চিঠি দিয়েছেন কোরি বুকার, ডন বেয়ার এবং এলিজাবেথ ওয়ারেনের মতো ডেমোক্র্যাট নেতারা।
তবে গ্যাসের চুলা নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপের সমালোচনাও করছেন অনেকে। তারা বলছেন, বৈদ্যুতিক চুলা ব্যয়বহুল হওয়ায়, তা ব্যবহার করা অনেকের জন্যই কঠিন।