লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্যাপিটল হিল’ স্টাইলে হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকরা ব্রাজিলের কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সুপ্রিম কোর্ট দখল করে নিয়েছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) বলসোনারোর সমর্থকদের এমন হামলার পর প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা দেশটির ফেডারেল বাহিনীকে রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দিয়েছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা দেশটির ক্যাপিটল হিলে অবস্থিত কংগ্রেস ভবনে হামলা চালায়। সেই হামলার দুবছরে মাথায় ব্রাজিলে এমন হামলা হলো।
বলসোনারোকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হওয়া লুলা ডা সিলভা এ হামলার উসকানিদাতা হিসেবে বলসোনারোকেই দায়ী করেছেন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি শপথ নেয়া লুলা দাবি করেছেন, সর্বশেষ নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নতুন করে নির্বাচন দাবি করার জন্য বলসোনারো তার সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করেছেন।
এ ঘটনার পরবর্তী সময়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লুলা বলেছেন, ‘এই দুর্বৃত্তরা যাদের আমরা বলতে পারি উন্মাদ ফ্যাসিস্ট, তারা এমন কাজ করেছে, যা আমাদের দেশের ইতিহাসে কখনোই ঘটেনি।’ সাও পাওলোতে ভ্রমণে থাকা লুলা এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘যেসব লোক এই কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’
রয়টার্সের খবরে আরও বলা হয়েছে, বলসোনারোর সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দরজা-জানালায় ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা ঘরের আসবাবপত্র ভাঙা জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলেছে। স্প্রিঙ্কলার সিস্টেমের সাহায্যে কংগ্রেস ভবনের একটি অংশ ডুবিয়ে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এজলাস কক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশটির ফেডারেল বাহিনীকে তলব করেছেন। আপাতত, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সময় আরও বাড়ানো হতে পারে।
প্রেসিডেন্টের শুভাকাঙ্ক্ষীদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে বিগত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেকয়েই এ হামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল, সেখানে তাহলে কী করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দাঙ্গাকারীদের কাছে হার মানল? তারা কেন আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল না?