ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, কংগ্রেস ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টে হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় ৪ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সময় রোববার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে বলসোনারোর সমর্থকেরা এসব স্থান দখল করে নেয়।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে অন্তত ৪০০ ব্যক্তিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্রাজিলের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্টের গভর্নর ইবানেইস রোচা। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের অবশ্যই তাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ করতে হবে।’
রোচা আরও বলেছেন, ‘রোববার বিকেলে সন্ত্রাসবাদী ঘটনায় যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এদিকে, বলসোনারোকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হওয়া লুলা ডা সিলভা এ হামলার উসকানিদাতা হিসেবে বলসোনারোকেই দায়ী করেছেন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি শপথ নেয়া লুলা দাবি করেছেন, সর্বশেষ নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নতুন করে নির্বাচন দাবি করার জন্য বলসোনারো তার সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করেছেন।
তবে বলসোনারোর রাজনৈতিক দল লিবারেল পার্টি ঘটনার দিনটিকে ব্রাজিলের জন্য একটি দুঃখের দিন বলে আখ্যা দিয়েছেন। দলটির প্রধান ভলদেমার কস্তা নেতো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আজকের দিনটি ব্রাজিলীয়দের জন্য একটি দুঃখের দিন।’
তবে হামলাকারীদের শাস্তি দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে হামলা পরবর্তী সময়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট লুলা বলেছেন, ‘এই দুর্বৃত্তরা যাদের আমরা বলতে পারি উন্মাদ ফ্যাসিস্ট, তারা এমন কাজ করেছে, যা আমাদের দেশের ইতিহাসে কখনোই ঘটেনি।’ সাও পাওলোতে ভ্রমণে থাকা লুলা এক সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, ‘যেসব লোক এই কাজ করেছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে আরও বলা হয়েছে, বলসোনারোর সমর্থকরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দরজা-জানালায় ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা ঘরের আসবাবপত্র ভাঙা জানালা দিয়ে বাইরে ছুড়ে ফেলেছে। স্প্রিঙ্কলার সিস্টেমের সাহায্যে কংগ্রেস ভবনের একটি অংশ ডুবিয়ে দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এজলাস কক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছে।
অপরদিকে, ঘটনার পরপরই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডা সিলভা রাজধানী ব্রাসিলিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশটির ফেডারেল বাহিনীকে তলব করেছেন। আপাতত, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের রাজধানীর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সময় আরও বাড়ানো হতে পারে।