করোনা মহামারির শুরু থেকে তিন বছর পর জিরো কোভিড নীতির সবশেষ বিধিনিষেধ ভ্রমণকারীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন নিয়ম তুলে দিয়ে সীমান্ত খুলে দিয়েছে চীন। জিরো কোভিড-বিধিনিষেধ নীতি চীনের জনগণকে ভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিলেও দেশটি বিশ্ব থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার (৮ জানুয়ারি) দীর্ঘ তিন বছর পর হংকংয়ের সঙ্গে চীনের সীমান্ত খুলে দেয়ায় স্থল ও সাগরপথে ভ্রমণকারীদের ঢল শুরু হয়েছে। হংকং থেকে অনেকেই চীনে যাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর পরিবার-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে উৎসুক হয়ে আছেন তারা।
হংকংয়ের এমন এক অধিবাসী তেরেসা চো বলেন, ‘আমি খুব খুশি, খুবই অধীর আগ্রহে ছিলাম। অনেক বছর বাবা-মাকে দেখিনি। বাবা-মা ভালো নেই। তাদের কোলন ক্যান্সার হওয়ার খবর শোনার পরও দেখতে যেতে পারিনি। এখন তাদেরকে দেখতে যেতে পেরে আমি সত্যিই খুশি।’
নজীরবিহীন বিক্ষোভের মুখে গত ডিসেম্বরে ‘জিরো কোভিড’ নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয় চীন সরকার। এর পর করোনা ভয়াবহ রূপ নেয় দেশটিতে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন বহু মানুষ। দেখা দিয়েছে শয্যা সংকট। রোগীর চাপে হিমশিম অবস্থা হাসপাতালগুলোর।
এ অবস্থায় নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নতুন বছরের ভাষণে তিনি স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে চীনের সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানান এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সাহসের সঙ্গে কাজ করার জন্য।
চীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি। সেগুলো মোকাবিলাও করেছি। এখন করোনা পরিস্থিতি নতুন একটা ধাপে পৌঁছেছে, এ পরিস্থিতি এখনও কঠিন। তবে সবাই সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বর্তমান অবস্থার উন্নতির জন্য। আমাদের কাছে মানুষের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সবার আগে।’
২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে চীন সরকার তাদের সব সীমান্ত এক প্রকার বন্ধই রেখেছিল। এই সময়ে অল্প যে কয়েকজন বিদেশি চীনে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছিলেন তাদের কোভিড পরীক্ষা এবং কোয়ারেন্টিনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে।