প্রায় ছয় বছর পর কিউবায় ফের চালু হয়েছে মার্কিন দূতাবাস। চলতি সপ্তাহে রাজধানী হাভানায় দূতাবাসের কার্যক্রম শুরু করেছে ওয়াশিংটন। কনস্যুলার কার্যক্রমের পাশাপাশি ভিসাসেবাও শুরু হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, মূলত সম্প্রতি মার্কিন সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দূতাবাস খোলার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওয়াশিংটন। মার্কিন কর্তৃপক্ষের পক্ষ বলা হয়েছে, প্রতি মাসে কিউবার অন্তত ১০ হাজার অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সীমান্তে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাদের দাবি, কিউবার অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে দেশটির বহু নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন।
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পর ২০১৫ সালের আগস্টে কিউবায় আবারও দূতাবাস খোলে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দূতাবাস চালু করেন। ঐতিহাসিক সম্পর্ক উন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এর আগের মাসে যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাস চালু করে কিউবা।
কিন্তু দু-বছরের মাথায় ২০১৭ সালে হাভানায় মার্কিন দূতাবাসকর্মীদের রহস্যজনক স্বাস্থ্যসমস্যার পর দূতাবাস বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দূতাবাস খোলার এক বছর পরই হাভানার মার্কিন দূতাবাসকর্মীরা স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা উল্লেখ করতে থাকেন। একই সঙ্গে উচ্চমাত্রার একধরনের শব্দতরঙ্গ থেকে এই সমস্যাটা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।
ওই সময় বিবিবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাভানা মিশনের ২০ জনেরও বেশি কর্মীর মস্তিষ্কে সামান্য ক্ষতিসহ কানে না শোনা, মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাবের মতো সমস্যা দেখা দেয়।
দূতাবাস কর্মকর্তারা বলেন, তাদের কর্মীদের স্বাস্থ্য খারাপ করে দিতে কোনো একধরনের ‘সাউন্ড ডিভাইস’ বা শব্দতরঙ্গ সৃষ্টির যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। ওই শব্দ তরঙ্গকে ‘সনিক অ্যাটাক’ অভিহিত করে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এ ধরনের কোনো বিষয়ে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে কিউবা।
এফবিআই, কানাডার পুলিশ ও কিউবার কর্তৃপক্ষের তদন্ত সত্ত্বেও ২০১৬ সালের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া এসব ঘটনার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পেছনে কিউবার কোনো হাত নেই বলে হাভানায় নিযুক্ত মার্কিন মিশনের চার্জ দ্য আফেয়ার্সকে ব্যক্তিগতভাবে নিশ্চিত করেন তৎকালে কিউবার প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ত্রো।