পটুয়াখালীর পতিতাপল্লিতে বিক্রি হয়ে যাওয়া এক নারী স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সম্প্রতি পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ভুক্তভোগী ওই নারী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, বরিশাল সদর উপজেলায় ১৪ বছর আগে কিশোরী বয়সে তার বিয়ে হয়। বিয়ের প্রায় দু-বছর পর স্বামী বিদেশ যাওয়ার কথা বলে তার কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। একদিন নির্যাতনের পর চিকিৎসার নাম করে তাকে বরিশাল শহরে নিয়ে কিছু ওষুধ খাওয়ান তার স্বামী। সে সময় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। সেখান থেকে পটুয়াখালী নিয়ে জাহিদের বোন পরিচয় দিয়ে এক বাসায় রেখে স্বামী চলে যান।
পরে ওই নারী জানতে পারেন, তাকে পটুয়াখালী পতিতালয়ের দালালের কাছে বিক্রি করে মোটা অঙ্কের অর্থ নেয়া হয়েছে। আর সেই টাকা দিয়েই বিদেশ পাড়ি দেন তার স্বামী। এদিকে ওষুধ খাওয়ার ২০ দিন পর একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন তিনি।
এদিকে দীর্ঘ ১০ বছর পতিতাবৃত্তি করার পর মুক্তি মেলে তার। এখন নিজে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে বসবাস করছেন। তবে সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন, তার স্বামী দেশে ফিরেছেন। এমন খবর পেয়ে গত ৫ ডিসেম্বর তিনি স্বামীর বাড়ি যান। এ সময় পথে চন্দ্রমোহন ইউনিয়ন পরিষদের সামনে স্বামীকে দেখতে পান। তাকে দেখে স্বামী একটি দোকানে নিয়ে বসান এবং তিনি কেন সেখানে গেছেন, সে জন্য তাকে গালমন্দ করতে থাকেন।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, স্ত্রী বলে দাবি করলে তার ওপর চড়াও হন স্বামী। একপর্যায়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভেদুরিয়ার ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন সুজন ও স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার লিটনের সহযোগিতায় পরিষদের এক রুমে আটকে রেখে তাকে মারধর করা হয়। ওই সময় সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যান তারা। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান বন্দর থানা পুলিশের মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে পটুয়াখালী পাঠিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে ওই নারী বলেন, ‘আমি কী অপরাধ করেছি ,আমার জীবনটা কেন এমনভাবে চলবে। আমি তো স্বামীর সংসার করতে চাই। আমাকে যখন বিয়ে করা হয়েছে, তখন আমি সবে মাত্র সাবালিকা হয়েছিলাম। সেই থেকে আমাকে নির্যাতন সহ্য করতে হচ্ছে। আমি আমার স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে চাই। আর না হলে আমি বিচার চাই।