সকাল গড়িয়ে দুপুর, অথচ ভাঙেনি প্রকৃতির আড়মোড়া। ভাঙেনি আলস্য। সর্বত্রই কুয়াশার রাজত্ব। কনকনে হিমেল বাতাসে নাকাল রাজধানীসহ দেশবাসী। শীত নিবারণের জন্য একাধিক গরম কাপড় মুড়িয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে ঘরের বাইরে বের হন সবাই। শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুর হয়ে আসলেও সূর্যের দেখা না মেলায় পরিস্থিতি পৌঁছেছে চরমে।
প্রকৃতির নিয়মে বছর ঘুরে আসা শীত এভাবেই বদলে দিয়েছে চিরচেনা রাজধানী ঢাকার চিত্র। বদলে দিয়েছে নাগরিক জীবনের প্রেক্ষাপট। বদলে দিয়েছে বৈচিত্র্যময় প্রাণ-প্রকৃতিও।
এদিকে, রাজধানীতে শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া, একদিনে ১৩টি জেলা যুক্ত হয়ে দেশের ১৭ জেলায় বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। জেলাগুলো হলো: ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও বরিশাল।
দিন ও রাতের তাপমাত্রায় পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণেই শীতের অনুভূতি বাড়ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। যা আগামী আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।
শনিবার সাপ্তাহের দ্বিতীয় ছুটির দিনে রাজধানীর সড়কগুলোতে মানুষের উপস্থিতি ছিল অন্যদিনের তুলনায় অনেক কম। কাজ কিংবা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হয়েছেন খুব কম সংখ্যক মানুষই। যারা বেরিয়েছেন তাদের প্রত্যেকেই ভুগেছেন শীতের তীব্রতায়।
দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত আর কুয়াশার দাপটে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। শহরের ভাসমান মানুষের মধ্যে যারা রাস্তা বা উন্মুক্ত স্থানে থাকেন, তাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
ঢাকার প্রধান সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে যানবাহনগুলোকে। অল্প দূরত্বেও ঠিকমতো কিছু দেখা যাচ্ছে না। ঠিক যেন কোনো গ্রামীণ জনপদের সড়ক কিংবা মহাসড়ক।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজধানীতে শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত চারদিনে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা কমেছে। আগামী দু-এক দিন এই শীতের অনুভূতি থাকতে পারে। দুই দিনের মধ্যে কুয়াশা কিছুটা কাটতে শুরু করবে। ফলে রোদ বেড়ে তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। কমতে থাকবে শীতও।