ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের শক্তিশালী রেকর্ড দেখিয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এশিয়ান লাইট ইন্টারন্যাশনাল সম্প্রতি এক নিবন্ধে এ তথ্য তুলে ধরেছে।
নিবন্ধটির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বার্তা সংস্থা এএনআইসহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, ‘জনসংখ্যাগত সুফল, শক্তিশালী তৈরি পোশাক খাত (আরএমজি) ও এর রফতানি প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীল রেমিট্যান্স প্রবাহ এবং স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা’ গত ২০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে গেছে।’
নিবন্ধে আরও বলা হয়, নতুন নতুন ফ্লাইওভার, সেতু এবং বাণিজ্যিক বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি ‘উল্লেখযোগ্য রূপান্তর’ ঘটেছে। এছাড়াও গত বছরের ২৫ জুন পদ্মা নদীর ওপর ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল-সড়ক সেতু চালু হয়।
আন্তর্জাতিক এ সংবাদমাধ্যমটির মতে, স্বাধীনতার পর থেকে পদ্মা সেতুই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ দেশ বাংলাদেশ এখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ অঞ্চলে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হয়ে ওঠেছে। অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।
এশিয়ান লাইট ইন্টারন্যাশনালের নিবন্ধে আরও বলা হয়, একসময় বাংলাদেশ কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্যই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে আসলেও, সেই দেশটিই এখন লাখো মানুষকে দারিদ্র্যের কাষাঘাত থেকে বের করে এনে ৬.৬ শতাংশেরও বেশি গড় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাক্ষী হয়েছে। এমনকি মিয়ানমার থেকে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মতে, জিডিপির দিক থেকে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৩তম বৃহত্তম অর্থনীতি। একই সঙ্গে পিপিপির (ক্রয় ক্ষমতা সমতা) দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩২তম।
নিবন্ধে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির শীর্ষ ১০টির মধ্যেও রয়েছে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক পেশাদার পরিষেবা ব্র্যান্ড প্রাইসওয়াটারহাউসকুপার্সের দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ২৮তম বৃহত্তম অর্থনীতি হবে।
এশিয়ান লাইট ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার রফতানিমুখী শিল্প সম্প্রসারণ এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে ২০১০ সালে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন প্রণয়ন করে।
দশমবারের মতো ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছেন। গত ২৫ ডিসেম্বর গণভবনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘কারও এতবার (নেতৃত্বের) দায়িত্ব নেয়া উচিত না; কিন্তু বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমি দায়িত্বটি নিয়েছি। আপনাদের বুঝতে হবে, আমার বয়স বাড়ছে।’
সেদিন জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসকে আওয়ামী লীগের ‘সবচেয়ে বড় শক্তি’ বলেও অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।