ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও শিয়া ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ব্যঙ্গচিত্র ছেপে তোপের মুখে পড়ল ফরাসি ব্যঙ্গ ম্যাগাজিন শার্লি এবদো। ইরান সরকারের পক্ষ থেকে বুধবার (০৪ জানুয়ারি) এ বিষয়ে ফ্রান্সকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, শার্লি এবদো ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশে সংযত না হলে ‘পরিণতি খারাপ হবে’। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, গত বছরের ডিসেম্বরে একটি ব্যঙ্গচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল শার্লি। সম্প্রতি সেগুলো প্রকাশ করেছে তারা। সেখানে মুসলিম দুনিয়ার অন্যান্য নেতার পাশাপাশি অন্যতম প্রভাবশালী খামেনির ব্যঙ্গচিত্রও প্রকাশ পেয়েছিল।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেন আমির আব্দুল্লাহিয়ানের অভিযোগ, ওই ব্যঙ্গচিত্র ‘অবমাননাকর’। ইরানে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস রোচেকে তলব করে এ বিষয়ে কূটনৈতিক প্রতিবাদও জানানো হয়েছে।
শার্লি এবদো প্রথম সাড়া ফেলেছিল ২০০৬ সালে। ডেনমার্কের এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি ধর্মীয় ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে তোলপাড় চলছিল তখন। শার্লি এবদো সেই ছবিটাই আবার ছাপে। তবে তখন তাদের কার্যালয়ে হামলা হয়নি। আরও পাঁচ বছর পর ২০০৯ সালে তারা আক্রমণের মুখে পড়েছিল। মুসলিম জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর লাগাতার হুমকির মধ্যেও গুটিয়ে যায়নি তারা। এরপর ২০১১ সালে আবার এক ব্যঙ্গাত্মক প্রচ্ছদ কাহিনি প্রকাশিত হয়। জবাবে কট্টরপন্থি কয়েক জন মুসলমান যুবক বোমা মেরে আগুন লাগিয়েছিলেন শার্লির কার্যালয়ে।
ধর্মীয় ব্যঙ্গচিত্র ছেপে ২০১৫ সালেও ভয়াবহ জঙ্গি আক্রমণের শিকার হয়েছিল শার্লি এবদো। বছর দুয়েক আগে এক পাকিস্তানি যুবক শার্লির দফতরের সামনে দুজনকে ছুরিকাঘাতে জখম করে। ঘটনাচক্রে সে সময়ই ২০১৫ সালের জঙ্গি হামলার বিচারপর্ব শুরু হয়েছিল। শার্লি এবদো আবারও সেই ছবি ছেপে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করে। সব মিলিয়ে ফ্রান্সে ব্যঙ্গচিত্র বিতর্ক নতুন করে দানা বাঁধছিল। আর তাতে যেন ঘি ঢালল খোমেনি বিতর্ক!