কনকনে বাতাস আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত উত্তরের শহর রাজশাহী। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তীব্র শীতে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিদেরও জবুথবু অবস্থা।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমে সর্বনিম্ন। এদিন বাতাসের আর্দ্রতা বিরাজ করছে ৯৭ শতাংশ।
এদিকে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। অন্যদিকে ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলো রাস্তায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। আর ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে রোগীর চাপ।
রিকশাচালক রহিম মিয়া জানান, ‘ভোর থেকে কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডায় গাড়ি নিয়ে বের হতে সমস্যা হয়। যাত্রীও পাওয়া যায় না। তবে আজ সকালে রোদ ওঠার পর বাসা থেকে অনেকেই বের হয়েছে। আমরা ভাড়া পাচ্ছি।’
স্থানীয়রা বলেন, ‘শীতের সকালে কিংবা সন্ধ্যায় চায়ের দোকানের সামনে মাফলার জড়ানো মুখগুলো, দুই হাতে চায়ের কাপ ধরে উষ্ণতা নিচ্ছেন আর চা পান করছেন। শীতের সকালে চায়ের কাপে মুখ না দিয়ে বাড়ি থেকে কাজে বের হয় না অনেকে। শীতে এককাপ চায়ের একটু উষ্ণতা নিতে পাড়ার চায়ের দোকানে এখন শীতের সকালে উপচেপড়া ভিড়।’
জেলা শহরের চা বিক্রেতা মাসুদ বললেন, ‘দোকানে বেচা-বিক্রি সারা বছরই ভালো। তবে শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চায়ের বিক্রি-বাট্টাও বেড়েছে দ্বিগুণ।’
এর আগে একদিনের ব্যবধানে হঠাৎ করেই এক লাফে ৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে রাজশাহীতে গত ২৯ ডিসেম্বর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে আসে। হু হু করে বইতে শুরু করে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা বাতাস। তাপমাত্রা কমায় দিনের বেলায়ও রাতের মতোই তীব্র শীত অনুভূত হয়। সূর্যের মুখ দেখা গেলেও উজ্জ্বল রোদের কোনো উষ্ণতা ছিল না ওই দিন। ভোরে ও সন্ধ্যায় ছিল ঘন কুয়াশার দাপট। ফলে প্রচণ্ড ঠান্ডায় মহানগরীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। আর এরপর টানা দুদিন তাপমাত্রা বাড়ে। কিন্তু একই অবস্থা বিরাজ করছে আজও।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক দেবাল কুমার বলেন, এমন আবহাওয়া আরও বেশ কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। এ ছাড়া এ মাসে মাঝারি থেকে বড় ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।