লাখো ভক্তের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ফুটবলসম্রাট পেলে। রেকর্ড তিনবার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলের এ মহানায়ককে শেষ বিদায় জানাতে সাও পাওলোতে হাজির হয়েছিলেন সাবেক ও বর্তমান অনেক তারকা ফুটবলার। এমনকি ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ছুটে গিয়েছিলেন। তবে কোথাও দেখা মেলেনি নেইমারকে।
পূর্বসূরিকে বিদায় দিতে ব্রাজিলে যাওয়ার কথা ছিল নেইমারের। কিন্তু টিএনটি ব্রাজিলের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পিএসজি থেকে ছাড়পত্র না পাওয়ায় যেতে পারেননি তারকা এ ফুটবলার।
জানুয়ারির ঠাসা শিডিউলে প্যারিস জায়ান্টদের পরের ম্যাচেই খেলার কথা রয়েছে নেইমারের। আর তাই এ মুহূর্তে দেশে ফিরলে ক্লাব ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিধায় ছুটি দেয়া হয়নি তাকে।
তবে অন্যান্য সোর্স এমনও বলছে, ব্রাজিল ফরোয়ার্ড নিজেই এখন ক্লাব ছাড়াকে আদর্শ সময় মনে করেননি।
তবে নেইমার উপস্থিত না হলেও তার পক্ষে শেষকৃত্যে অংশ নিয়েছেন তার বাবা নেইমার সিনিয়র। পেলের বাবা গ্লোবোকে জানিয়েছেন, কিংবদন্তির মৃত্যুতে মন খারাপ নেইমারের। তিনি বলেন, ‘নেইমার আসতে পারেনি। তবে তার মন খুব খারাপ। সে আমাকে এখানে তার পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকতে বলেছে। কাউকে হারানো কত কষ্টের সেটা আমরা বুঝি। আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কেই হারাইনি, একজন মানুষকেও হারিয়েছি।’
পেলের মতো নেইমারের উত্থানও সান্তোসের হয়েই। তার মতোই ক্লাবটিকে জিতিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা কোপা লিবার্তোদেরেস। এরপর বার্সেলোনা জয় করে পিএসজিতে ঠাঁই নিয়েছেন নেইমার। জাতীয় দলেও পেলের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেলেকে ছুঁয়েছেন গোলের সংখ্যায়। ব্রাজিলের জার্সিতে ৭৭ গোল নিয়ে পেলে ও নেইমার আছেন চূঁড়ায়। দুজনের সম্পর্কটাও বরাবরই ভালো ছিল।
এদিকে ফুটবল কিংবদন্তির শেষ বিদায়ে নেইমারের না থাকা নিয়ে সমালোচনাও থেমে নেই। ব্রাজিলের এক সাংবাদিক বলেন, নেইমার যদি নিজে থেকে আগ্রহ দেখাত, তাহলে নিশ্চয়ই ছেড়ে দিতো পিএসজি। বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়ার জন্য তো ক্লাবের ওপর জোর খাটায় সে। অথচ পেলেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসতে পারল না?
তবে শেষকৃত্যে না এলেও পেলের মৃত্যুর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন নেইমার। ফুটবল মহানায়কের প্রয়ানে নেইমার লিখেছেন, পেলের আগে ১০ শুধুই একটা সংখ্যা ছিল। কোথাও একটা এমন লেখা পড়েছিলাম। এই বাক্যটা সুন্দর তবে অপূর্ণ। আমি বলব, পেলের আগে ফুটবল শুধুই একটা খেলা ছিল। সবকিছু পাল্টে দিয়েছিলেন পেলে। ফুটবলকে শিল্প বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। খেলাটাকে সুন্দর করে তুলেছিলেন। আনন্দ দিয়েছিলেন। গরিব এবং বিশেষ করে কৃষ্ণাঙ্গদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন পেলে। ব্রাজিলকে একটা ছবি দেখতে সাহায্য করেছিলেন। ধন্যবাদ রাজা, তোমার জন্য ফুটবল এবং ব্রাজিলের স্থান উঁচু হয়েছে। পেলে নেই কিন্তু তার জাদু থেকে যাবে। পেলে সবসময় থাকবেন।