২০২২ সাল ছিল উত্তর কোরিয়ার রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার বছর। যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে ২০২২ সালে রেকর্ড গড়েছে দেশটি। ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম এত বেশি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পিইংইয়ং। শুধু তাই নয়, কিম প্রশাসন এযাবৎকালে যত ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে তার এক-চতুর্থাংশই ২০২২ সালে।
শুধু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা নয়, গেল বছরই দেশটির নেতা কিম জং-উন উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলে।
নানা উত্তেজনার মধ্যেই গেল বছর পার হলেও নতুন বছর কিম জং উন আর কী কী করতে পারেন, তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি। গেল বছরের শেষদিকে উত্তর কোরিয়া শক্তিশালী আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায়। এর মধ্যে রয়েছে হুয়াসং ১৭ ক্ষেপণাস্ত্র, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের যেকোনো জায়গায় আঘাত করতে সক্ষম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন বছরে কিম প্রশাসন পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ করার ওপর জোর দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনায় আছে আরও নতুন কিছু অস্ত্র তৈরিও। এর মধ্যে রয়েছে গুপ্তচর স্যাটেলাইট, যা এ বছরই উৎক্ষেপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা।
এমন ধারণার পেছনে যে সত্যতা রয়েছে, তা-ও বোঝা গেছে নতুন বছর শুরুর তিন ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে পিয়ংইয়ংয়ের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানো দেখে। চলতি বছর প্রশিক্ষণ বা মহড়ার উদ্দেশ্যে বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হতে পারে বলেও মত বিশ্লেষকদের।
গেল বছর উত্তর কোরিয়াকে পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবেও ঘোষণা দেন কিম। বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি বছর পিয়ংইয়ং আরও আগ্রাসি হয়ে উঠতে পারে। একই সঙ্গে বিস্তৃত করতে পারে দেশটির পরমাণু অস্ত্রের ভান্ডার।
এদিকে পরমাণু অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার উসকানির জবাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বেশকিছু পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, উত্তর কোরিয়াকে কঠোরভাবে মোকাবিলার হমকিও দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। এমন পরিস্থিতিতে নতুন বছরে দুই কোরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এ ছাড়া কিম জং উন তার উত্তরসূরি হিসেবে মেয়েকে বেছে নেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে গুঞ্জন। তবে ভবিষ্যতে কিম প্রশাসন যাই করুক না কেন, গেল বছরের তুলনায় এ বছরও উত্তর কোরিয়া পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।