ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো যে তার সেরা সময় পেছনে ফেলে এসেছেন সেটা চলতি মৌসুমের শুরুতেই বোঝা যাচ্ছিল। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের নতুন কোচ এরিক টেন হ্যাগ আসার পরই একাদশে তার জায়গা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তবে পর্তুগাল জাতীয় দলে তার জায়গা নিয়ে প্রশ্ন ওঠেনি এতোদিন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে গোটা পৃথিবী অবাক হয়ে দেখে পর্তুগালের একাদশ থেকে তার বাদ পড়া। তবে, সতীর্থ বের্নাদো সিলভা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় খুব বেশি অবাক হননি স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়রা।
কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে পর্তুগালের একাদশ চমকে দিয়েছিল বিশ্বকে। একাদশে যে জায়গা পাননি পর্তুগাল অধিনায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০০৪ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের পর এই প্রথম কোন প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে পর্তুগালের একাদশ থেকে বাদ পড়েন রোনালদো।
এমনকি কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর বিপক্ষেও প্রথম একাদশে জায়গা পাননি ৩৭ বছর বয়সী মহাতারকা। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নেমেও সেদিন পারেননি দলের বিদায় ঠেকাতে।
ক্লাবের একাদশে জায়গা হারানোর পর থেকেই সময়টা ভালো যাচ্ছিল না রোনালদোর। একের পর এক নেতিবাচক কারণে খবরের শিরোনাম হয়েছেন পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী। বিশ্বকাপের আগে পিয়ার্স মরগানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ টেন হ্যাগ ও ক্লাবের কঠোর সমালোচনার পর তো ক্লাব তার সঙ্গে চুক্তিই ছিন্ন করে।
এতো ঘটনার পরও কী তার বাদ পড়াটা অনুমিত ছিল না? রোনালদোর বাদ পড়ার ইঙ্গিতটা হয়তো পেয়েছিলেন তার জাতীয় দলের সতীর্থরাও। অন্তত বের্নার্দো সিলভার কথায় পাওয়া যায় তারই আভাস।
ম্যানচেস্টার সিটির এই প্লেমেকার জানিয়েছেন, রোনালদোর বাদ পড়াটা ‘অদ্ভুত’ লাগেনি তার কাছে। রেকর্ডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যানসিটির প্লেমেকার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে আমরা কথা বলতাম এবং জিজ্ঞেস করতাম, এটা কি সম্ভব, আদৌ সম্ভব? এটা হতো কারণ খেলোয়াড়দের নিয়ে আলোচনা হতো। কিন্তু লকার রুমের বাইরে আমরা শুধু তখনই দলকে একসঙ্গে পেতাম যখন ম্যাচের ২ ঘণ্টা আগে আমরা স্টেডিয়ামে পৌঁছাতাম। এখানে ২৬ জন খেলোয়াড় থাকত, কোচের জন্য একটা নির্দিষ্ট খেলার জন্য অনেক বেশি। এটা আমার জন্য খুব বেশি বিস্ময়ের ছিল না, কারণ তাকে যে কোনো একজনকে নিতে হবে। একজনের জন্য সিদ্ধান্তটা ভুল বা ঠিক হতে পারে, কিন্তু কোচের অধিকার আছে সেই সিদ্ধান্তটা নেয়ার।’
পুরুষদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডটি এখনও রোনালদোর দখলে। পর্তুগালের জার্সিতে ১৯৬ ম্যাচ খেলে ১১৮টি গোল করেছেন তিনি। ফার্নান্দো সান্তোসের বিদায়ের পর এখনও জাতীয় দলে খেলার সম্ভাবনা আছে তার। কাতারে নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলে ফেললেও এখনোই জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছেন না রোনালদো। ২০২৪ ইউরো খেলে অবসরের সিদ্ধান্ত নিতে চান সম্প্রতি আল নাসেরে যোগ দেয়া রোনালদো।