অভিনেতা রাজের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছিলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। এবার সে সুরে তাল মিলিয়ে স্বামী রাজও সব সম্পর্ক ছেদ করার ইঙ্গিত দিলেন।
অভিনেতা শরীফুল রাজের সঙ্গে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর ১০১ টাকা দেনমোহরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন পরীমণি। এ বছর ১০ আগস্ট ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন তিনি। একমাত্র ছেলে রাজ্য আর স্বামী রাজকে নিয়ে সুখের সংসারই ছিল এই সুন্দরী অভিনেত্রীর।
তবে সংসারে ভাঙনের সুর কবে বাজে তা নিয়ে এখনও সংশয়ে আছেন ভক্তরা। পরী নিজের সংসারের টানাপোড়নের কথা প্রথম প্রকাশ্যে আনেন গত ৯ নভেম্বর রাত সোয়া ২টায় একটি ফেসবুক পেজে। সে সময় সংসারে অশান্তির জন্য তিনি ঢালিউডের আরেক জনপ্রিয় নায়িকা বিদ্যা সিনহা সাহা মিমকে দায়ী করেন।
এরপর আবারও দাম্পত্য ঝামেলা মিটে যায় এ জুটির। সম্প্রতি ৩০ ডিসেম্বর মধ্যরাতে আবারও একটি স্ট্যাটাস দেন পরীমণি। যে স্ট্যাটাসে তাদের বিচ্ছেদের ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
স্ট্যাটাসে পরী লিখেছেন, ‘আমি আজ রাজকে আমার জীবন থেকে ছুটি দিয়ে দিলাম এবং নিজেকেও একটা অসুস্থ সম্পর্ক থেকে মুক্ত করলাম। জীবনে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার তুলনায় জরুরি আর কিছু নেই।’
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজের বাসা থেকে ছেলে রাজ্যকে নিয়ে বের হয়ে আসেন পরী। সন্তানকে নিয়ে বর্তমানে তিনি তার নিজের বাসাতেই আছেন।
রাজের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি প্রসঙ্গে পরী বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যা হচ্ছিল। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করেছি। তবে সমস্যা কাটিয়ে আর থাকতে পারলাম না। রাজের আচার-আচরণে একসঙ্গে থাকার পরিস্থিতি আর নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাসা ছেড়ে আলাদা হয়ে গেলাম।’
এরপর ১ জানুয়ারি দুটি ছবি পোস্ট করেন পরী। রক্তাক্ত বিছানার সে ছবির ক্যাপশনে পরী ইংরেজিতে দুটি লাইন লিখেন। যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায়, হ্যাপি নিউ ইয়ার (শুভ নববর্ষ)! আগামীকাল প্রেস কনফারেন্স…লোডিং।
তবে সংবাদ সম্মেলনের পথ থেকে সরে এসে ওইদিনই আরেকটি পোস্ট দেন তিনি। রোববার (১ জানুয়ারি) বিকেল ৪টা ৪৯ মিনিটে সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, স্বামী শরীফুল রাজের শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি।
এসব অভিযোগ নিয়ে প্রথমে কোনো কথা না বললেও এরপর অভিনেতা রাজও এ বিষয়ে মুখ খোলেন। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানান, নিজের বেডরুম এখন পাবলিক হওয়ায় সবাই তার মজা নিচ্ছে; যা নায়কের ব্যক্তিজীবন ও পেশাজীবন দুই-ই ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
পরীমণির জীবন থেকে রাজের ছুটি প্রসঙ্গে রাজ বলেন, ‘আমি কোনো সরকারি চাকরি করি না। আমাকে ছুটি দেওয়ার কিছু নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি চুপচাপ আছি কারণ তাকে সম্মান করি। সে আমার সন্তানের মা।’
একপর্যায় বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলেন তিনি। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘দ্রুতই আইনজীবীর সঙ্গে বসব। যত দ্রুত সম্ভব অফিসিয়ালি সব শেষ করব। সন্তান কত দিন কার কাছে থাকবে, এ ব্যাপারে যে আইনি পরামর্শ দেবে সেটাই মেনে নেব।’ এ মন্তব্যের মাধ্যমে পরীর পাশাপাশি রাজও তার বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি টানতে চাইছেন, এটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।