ফুটবল সম্রাট পেলেকে বিদায় দিতে প্রস্তুত গোটা ব্রাজিল। কিংবদন্তিকে বিদায় দিতে ব্রাজিল পৌঁছেছেন দেশটির বর্তমান ও সাবেক তারকা ফুটবলাররা। পূর্বসূরিকে বিদায় দিতে ব্রাজিলে যাওয়ার কথা ছিল ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের। কিন্তু, পেলেকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্রাজিল যাচ্ছেন না নেইমার।
ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘লেকিপ’ জানিয়েছিল, পেলের শেষকৃত্যে যোগ দিতে সাও পাওলো যেতে ক্লাব থেকে ছুটি নিয়েছেন নেইমার জুনিয়র। কিন্তু, ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’ জানিয়েছে ভিন্ন কথা। পেলেকে শ্রদ্ধা জানাতে ব্রাজিলে যাননি পিএসজি তারকা।
তবে, নেইমার উপস্থিত না হলেও তার পক্ষে শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছেন তার বাবা নেইমার সিনিয়র। পেলের কফিনবন্দী দেহ সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য ২৪ ঘণ্টার জন্য সান্তোস এফসির মাঠ ভিলা বেলমিরোয় রাখা হয়েছে।
পেলের বাবা নেইমার সিনিয়র গ্লোবোকে নিশ্চিত করেছেন পিএসজি তারকার না আসার বিষয়টি। জানিয়েছেন, কিংবদন্তির মৃত্যুতে মন খারাপ তার। তিনি বলেন, ‘নেইমার আসবে না। তবে তার মন খুব খারাপ। সে আমাকে এখানে তার পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকতে বলেছে। কাউকে হারানো কত কষ্টের সেটা আমরা বুঝি। আমরা শুধু একজন খেলোয়াড়কেই হারাইনি, একজন মানুষকেও হারিয়েছি।’
মাত্র ১৭ বছর বয়সে ১৯৫৮ সালে ব্রাজিলকে তাদের আরাধ্য বিশ্বকাপ এনে দেন পেলে। তার হাত ধরেই ফুটবলে ব্রাজিলিয়ানদের রাজত্বের শুরু। খেলাটাকে গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পেলের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম পেলেকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে। তাই নেইমার সিনিয়র মনে করেন ফুটবল পেলের কাছে ঋণী।
তিনি বলেন, ‘ফুটবল পেলের কাছে অনেক ঋণী। আমার মনে হয়, ব্রাজিলিয়ানদের এই দুঃখের সময়ে তাকে এভাবেই শ্রদ্ধা জানানো উচিত। তার পরিবারের জন্যও এটা দুঃখের সময়। তিনি অনেকের প্রেরণা। তার কারণেই আজ আমরা এতটা উঠে আসতে পেরেছি। শুধু আগের প্রজন্ম নয়, বর্তমান প্রজন্মের জন্যও তিনি প্রেরণা।’
পেলের মতো নেইমারের উত্থানও সান্তোসের হয়েই। তার মতোই ক্লাবটিকে জিতিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা কোপা লিবার্তোদেরেস। এরপর বার্সেলোনা জয় করে পিএসজিতে ঠাই নিয়েছেন নেইমার। জাতীয় দলেও পেলের পদাঙ্ক অনুসরণ করে পেলেকে ছুঁয়েছেন গোলের সংখ্যায়। ব্রাজিলের জার্সিতে ৭৭ গোল নিয়ে পেলে ও নেইমার আছেন চূড়ায়। দুজনের সম্পর্কটাও বরাবরই ভালো ছিল।
এদিকে, সম্মান প্রদর্শন শেষে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) পেলের মরদেহ নিয়ে শেষযাত্রা হবে সান্তোসের রাস্তায়। নিয়ে যাওয়া হবে ক্যানাল ৬ সড়কের পৈতৃক বাড়ির সামনে দিয়ে। যেখানে থাকেন পেলের শত বছর বয়সী শয্যাশায়ী মা। ছেলেকে শেষবারের মতো একবার ছুঁয়ে দেখবেন বলে। স্মৃতি হারিয়ে ফেলায় তিনি জানেনই না তার ছেলে মারা গেছে।
এদিন মেমোরিয়াল নেকরোপোল একিউমেনিকা সমাধিস্থলের ১৪ তলা ভবনে সমাহিত করার কথা রয়েছে পেলেকে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে উচু ও খাড়া সমাধিস্থল। এর ওপর থেকে ভিলা বেলমিরো স্টেডিয়ামও দেখা যায়।