নিজেদের মুদ্রার বদলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুদ্রা ইউরোর ব্যবহার শুরু করেছে ক্রোয়েশিয়া। একইসঙ্গে ইউরোপের পাসপোর্টমুক্ত সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করেছে দেশটি। দুটি পদক্ষেপই বলকান রাষ্ট্রটির জন্য বড় মাইলফলক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, নতুন বছরের প্রথম দিন রোববার (১ জানুয়ারি) ক্রোয়েশিয়ায় ইউরোর ব্যবহার শুরু হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটির জন্য ইউরো অর্থনৈতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে। যদিও এ নিয়ে নাগরিকদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
পুরনো বছরকে বিদায় দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) বলকান রাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়া নিজেদের মুদ্রা কুনাকেও বিদায় জানায়। নতুন বছরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে দেশটি ইউরো ব্যবহারকারী ২০তম দেশ হিসেবে নাম লিখিয়েছে। রোববার ক্রোয়েশিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুদ্রা ইউরোর ব্যবহার শুরুর পাশাপাশি ইউরোপের পাসপোর্টমুক্ত সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। ক্রোয়েশিয়া এখন পাসপোর্টমুক্ত সেনজেন অঞ্চলের ২৭তম দেশ।
এদিন ক্রোয়েশিয়া ও স্লোভেনিয়ার দুই নেতার সঙ্গে দেখা করেন ইইউ প্রধান ভন ডার লিয়েন। ধন্যবাদ জানান দেশটির বাসিন্দাদের। বলেন, সেনজেন অঞ্চলে প্রবেশ ও মুদ্রা হিসেবে ইউরো গ্রহণ করায় ক্রোয়েশিয়াবাসী ও সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা জানি এই কাজটি সহজ ছিল না। এটি ক্রোয়েশিয়ার জন্য বড় অর্জন।
প্রায় এক দশক আগে ইইউতে যোগ দেয়ার পর দুটি পদক্ষেপকেই ক্রোয়েশিয়ার জন্য মাইলফলক হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। দাম বেড়েছে জ্বালানি ও খাবারের। এ অবস্থায় মুদ্রা হিসেবে ইউরো ক্রোয়েশিয়ার অর্থনৈতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করবে।
তবে ক্রোয়েশিয়ার এমন পদক্ষেপে নাগরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অনেকের আশঙ্কা, ইউরো গ্রহণের ফলে তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে। আবার অনেকের কাছে এটি নতুন কিছু নয় বরং সেনজেন অঞ্চলে যুক্ত হওয়াটা পর্যটনের জন্য দারুণ খবর বলে মনে করছেন তারা।
আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরো গ্রহণ করলেও ক্রোয়েশিয়ায় এই মুদ্রার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই ক্রোয়েশীয়রা নিজেদের গাড়ি-বাড়ির মতো মূল্যবান সম্পদের দাম ইউরোতে নির্ধারণ করছেন। ২০১৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দেয় দেশটি।