আবারও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন লুলা ইনাসিও দা সিলভা। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশের দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং বর্ণবাদকে সমূলে উৎপাটন করার রাস্তা তৈরি করার। স্থানীয় সময় রোববার (১ জানুয়ারি) এক জমকালো অনুষ্ঠানে তিনি শপথ নেন।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে লুলা এবং তার স্ত্রী রোজাঞ্জেলা দা সিলভা স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ব্রাসিলিয়ার মেট্রোপলিটন ক্যাথেড্রালে পৌঁছান। পরে সেখানে আনুষ্ঠানিকতা সেরে তারা চলে যান দেশটির কংগ্রেস ভবনে।
কংগ্রেস ভবনে লুলার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের বাকি আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে লুলা কংগ্রেসে একটি ভাষণ দেন। ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে, আমি ব্রাজিলের সংবিধানের প্রতিপালন, সুরক্ষা এবং সেটিতে পূর্ণতা দেয়ার চেষ্টা করব। আইনের শাসন জারি রেখে ব্রাজিলের মানুষের কল্যাণে কাজ করব। ব্রাজিলীয়দের ঐক্য, দেশের অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করব।’
এদিকে ব্রাজিলের প্রথা অনুসারে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট নতুন প্রেসিডেন্টের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। কিন্তু লুলার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো। তিনি দুদিন আগেই দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যামিল্টন মৌরোর কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় চলে যান। বলসোনারো আগে থেকেই বলে আসছিলেন তিনি লুলার কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন না।
৭৬ বছর বয়সী লুলা এর আগে ২০০২ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে টানা ৮ বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর দায়িত্ব ত্যাগ করেন তিনি। তারপর দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন দিলমা রুসেফ। তবে রুসেফ মেয়াদ পূর্ণ করার আগেই অভিশংসনের কারণে ক্ষমতা হারান। দিলমা রুসেফের জায়াগায় ব্রাজিলের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হন মিশেল তেমের।
পরে ২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়লাভ করেন জাইর বলসোনারো। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সে বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বলসোনারো লুলার কাছে হেরে যান। সেই জয়ই লুলাকে তৃতীয় মেয়াদে আবারও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদে আসীন সুযোগ তৈরি করে দেয়।