পেলে চলে যান নি, তিনি আছেন; তিনি থাকবেন আমাদের মাঝে চিরদিন একইরকম ভাবে। এ বিশ্ব ভ্রম্মান্ডে ফুটবল যতদিন খেলা হবে, ততদিন সবাই মনে রাখবেন ‘ও রেই’কে। ফুটবলের রাজাকে। পেলের মৃত্যুতে এভাবেই আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
আধুনিক ফুটবলের নতুন তর্ক, গ্রেটেস্ট অব অল টাইমের খেতাবটা যাবে কার দখলে? অনেকের কাছে ম্যারাডোনা এ রেসে অস্পৃশ্য, আবার অনেকের কাছে জাদুকর লিওনেল মেসি। কিন্তু, ফুটবল দুনিয়ায় ‘সেরা’ শব্দটা বসানো যায় কেবল একজনের পাশেই। তিনি ফুটবলের কালো মানিক, ল্যাটিনদের পোস্টার বয় এডসন আরান্তেস ডু নাসিমান্তো।
প্রতিটা ফুটবল সমর্থকের এই মনের কথাটাকেই আরও একবার নিজের ভালোবাসা জানাতে গিয়ে আওড়ে গেলেন ফিফা বস। দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়ে দিলেন তিনি আছেন, তিনি থাকবেন। কিংবদন্তিদের কখনো বিদায় হয় না। ফুটবলের প্রতি মানুষের ভালোবাসা যতদিন থাকবে ঠিক ততদিন সবার হৃদয়ে থাকবেন পেলে।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘আজ এমন একটা দিন, যেটা কোন ফুটবল সমর্থক কখনো দেখতে চায়নি। আমরা পেলেকে হারিয়েছি। আমরা আমাদের রাজাকে হারিয়েছি। আমরা শোকার্ত। কিন্তু আমি জানি, তিনি আছেন। তিনি থাকবেন। তিনি কোনদিন আমাদের ছেড়ে যাবেন না। তিনি ফুটবল দুনিয়ায় যা করে গেছেন, তা আজীবন তাকে আমাদের মাঝে বাঁচিয়ে রাখবে।’
ষোল আউন্সের একটা চর্মগোলক নিয়ে তিনি যা করেছেন, তা আজও প্রতিটা মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য। তার ক্ষিপ্র গতি শিল্পির আঁকা সেরা কোন ছবির চেয়ে কম সুন্দর ছিলো না। ৮২’তে বুট জোড়াকে উঠিয়ে রেখেছিলেন পেলে, কিন্তু তারপর এত বছরেও তার গড়া রেকর্ডগুলো অক্ষয় অমর। আজও তা স্পর্শ করা প্রতিটা ফুটবলারের স্বপ্ন।
ইনফান্তিনো বলেন, ‘তিনটা বিশ্বকাপ জেতা একমাত্র অ্যাথলিট তিনি। এতো বছরেও তার রেকর্ডের কাছাকাছি যেতে পারেননি কেউ। এটা অবিশ্বাস্য। তার মতো বড় হৃদয়ের মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। সবাইকে যেভাবে হাসি দিয়ে বরণ করে নিতেন তা অতুলনীয়। এ কারণেই আগামী প্রজন্মের কাছেও তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
মহানায়কের মৃত্যুতে আজ শোকে স্তব্ধ পুরো পৃথিবী। স্পেন থেকে জার্মানি, আফ্রিকা থেকে ইতালি সব জায়গায় আজ প্রিয়জন হারানোর মাতম। বাদ থাকেনি ফিফাও, নিজেদের প্রধান কার্যালয়ে রাজাকে কুর্নিশ জানিয়ে অর্ধনমিত রাখা হয়েছে পতাকাগুলো।