চীনে করোনা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি নেই এবং আবার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে, চীন থেকে দেশটিতে প্রবেশে কোভিড-নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগবে। যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইতালিও বাধ্যতামূলক করেছে করোনা সনদ। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করে।
বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে গেল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের বিধি বাতিলের ঘোষণা দেয় চীন। ৮ জানুয়ারি থেকে এ বিধি কার্যকর থাকবে না বলে জানানো হয়। আর এই ঘোষণায় দেশে দেশে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে, চীন থেকে দেশটিতে প্রবেশে কোভিড-নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগবে। ৫ জানুয়ারি থেকে এই বিধি চালু করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনে করোনার নতুন ধরণ দেখা দিয়েছে বলে ধারণা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে চীন এ বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মত ইতালিও একই পথে হাঁটছে। ইতালি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চীন থেকে দেশটিতে যাওয়া দুটি ফ্লাইটে করোনা পরীক্ষা করা হয়, সেখানে ৪৬ শতাংশ যাত্রীর রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ অবস্থায় চীন থেকে ইতালিতে ঢুকতে গেলে বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, চীন থেকে কোনো যাত্রী ইতালিতে পৌঁছাবার পরেও বাধ্যতামূলকভাবে করোনা পরীক্ষা করা হবে।
শুধু তাই নয় বৃহস্পতিবার ইতালি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাকি রাষ্ট্রগুলোকে একই পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, ইইউ এর অন্য দেশগুলোর একই পদক্ষেপ না নিলে তার সব চেষ্টা বিফলে যাবে। চীন ফেরতদের পরীক্ষা এবং দরকার হলে কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে ইতালীয় কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, তাইওয়ান, ভারতও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ইইউ এ সিদ্ধান্তে একমত নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রোগ সংস্থা জানিয়েছে, কোভিড -১৯-এর জন্য চীন থেকে ভ্রমণকারীদের স্ক্রিনিং করা হবে অযৌক্তিক। একই সঙ্গে করোনার এই ঢেউ ইইউভুক্ত দেশে খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না বলে জানায় সংস্থাটি। সব দেশ ইচ্ছেমত যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে জানিয়েছে ইইউ।
এদিকে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন এ সপ্তাহেই জানায় প্রতিদিন গড়ে চার হাজার মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠান এয়ারফিনিটি জানায় চীনে প্রতিদিন ৯ হাজার মানুষ করোনায় মারা যেতে পারে।
চীনের এমন পরিস্থিতিতে একজন শীর্ষ চীনা মহামারী বিশেষজ্ঞ বৃহস্পতিবার আসন্ন নতুন বছরের ছুটিতে সারা দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছেন। চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের প্রধান মহামারি বিশেষজ্ঞ উ জুনিউ বৃহস্পতিবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন বেইজিং, তিয়ানজিন এবং মধ্য চীনের মহানগর চেংডুতে সংক্রমণ সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করেছে।