ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসসমৃদ্ধ জেলা ফেনীতে এবার ইত্যাদির পর্ব ধারণ করা হয়েছে।
মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে বাংলাদেশের প্রাচীনতম বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম ১৩৬ বছর আগের ফেনী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে। মঞ্চের সেট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে শতবর্ষী ফেনী সরকারি কলেজ।
ফেনী সমৃদ্ধ হওয়ার পেছনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এই প্রতিষ্ঠান দুটির রয়েছে বিরাট অবদান। অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয় গত ১৭ ডিসেম্বর।
গণমানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির এই পর্বটি একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে প্রচারিত হবে শুক্রবার (৩০ ডিসেম্বর)-রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কসমেটিকস লিমিটেড।
জানা গেছে, ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে ফেনীতে ছিল উৎসবের আমেজ। পুরো স্কুল মাঠই ছিল দর্শকপূর্ণ। মাঠের সামনে রাস্তায় এবং চারদিকের বাড়িঘরের ছাদেও ছিলো দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে সেদিন বর্ণিল আলো এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন মঞ্চে ইত্যাদির ধারণ অনুষ্ঠান চলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
জেলা প্রশাসন ও ফেনী পৌরসভার আন্তরিক সহযোগিতায় অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে ইত্যাদির ধারণ সম্পন্ন হয়। এই দীর্ঘ সময়ে দর্শকরা কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের রাতে কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে মন্ত্রমুগ্ধের মতো ধারণ অনুষ্ঠান দেখার পাশাপাশি অবাক বিস্ময়ে দেখেছেন একটি ভালো অনুষ্ঠান করতে হলে কতটা শ্রম দিতে হয়। কিছুক্ষণ পরপরই দর্শকদের তালিবৃষ্টি আর আনন্দ চিৎকারে গোটা ফেনী শহরই যেন সেদিন আনন্দ নগরীতে পরিণত হয়েছিল।
এবারের ইত্যাদিতেও রয়েছে কিছু মানবিক, সচেতনতা, তথ্যভিত্তিক ও শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। অনুষ্ঠানে আধুনিক ও ফোকের ফিউশনে একটি দ্বৈত সংগীত গেয়েছেন এ সময়ের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী পান্থ কানাই ও ডলি সায়ন্তনী। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল, সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন আকাশ মাহমুদ। রয়েছে ফেনী জেলাকে নিয়ে একটি পরিচিতিমূলক গানের সঙ্গে স্থানীয় প্রায় শতাধিক নৃত্যশিল্পীর নাচ। গানটির কথা লিখেছেন মনিরুজ্জামান পলাশ, সুর করেছেন হানিফ সংকেত, সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদি, কণ্ঠ দিয়েছে তানজিনা রুমা, পুলক ও রিয়াদ। নৃত্য পরিচালনা করেছেন মনিরুল ইসলাম মুকুল।
দর্শকপর্বের নিয়ম অনুযায়ী ধারণস্থান ফেনীকে ঘিরে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে চার দর্শক নির্বাচন করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে নির্বাচিত দর্শকরা আঞ্চলিক ভাষায় একটি নাট্যাংশে অভিনয় করেন; যা ছিল বেশ উপভোগ্য। দর্শকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী, ফেনী কন্যা শমী কায়সার। এই পর্বে হানিফ সংকেতের সঙ্গে রয়েছে তার একটি ভিন্নরকম সাক্ষাৎকার।
নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও যথারীতি রয়েছে নানি-নাতি, বিদেশি প্রতিবেদন ও চিঠিপত্র পর্ব। এ ছাড়াও এবারের ইত্যাদিতে বিভিন্ন সামাজিক অসংগতি ও সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্রুপাত্মক নাট্যাংশ।