রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে গুপ্তহত্যার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ পেন্টাগনের কতিপয় কর্মকর্তা। রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন দাবি করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে তাস জানায়, সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ বলেছেন, “পেন্টাগনের ‘অজ্ঞাতনামা কিছু কর্মকর্তা’ ক্রেমলিনের কর্মকর্তাদের ‘শিরশ্ছেদে হামলা’ চালানোর হুমকি দিয়েছেন, যা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে হত্যার হুমকির পর্যায়ে পড়ে।”
ল্যাভরভ আরও বলেন, ‘কারো মনে যদি এ ধরনের কোনো চিন্তাভাবনা বাস্তবেই থেকে থাকে, তাহলে এ ধরনের পরিকল্পনার সম্ভাব্য পরিণতি কী হবে, সে ব্যাপারে তাকে আরও সময় নিয়ে আরও ভালো করে চিন্তা করা উচিত।’
সাক্ষাৎকারে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেয়ার অভিযোগ করেছেন ল্যাভরভ। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে তারা সম্মান করে কথা বলার সব নিদর্শন ঝেড়ে ফেলে দিয়েছে। কুখ্যাত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস নির্বাচনী প্রচারের সময় প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, তিনি পরমাণু হামলার নির্দেশ দিতে প্রস্তুত।’
রাশিয়ার শীর্ষ এ কূটনীতিক আরও বলেন, ‘আমি এখানে কিয়েভ সরকারের অতি উসকানির কথা বলছি না। ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটো রাষ্ট্রগুলোকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু হামলার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এটা গ্রহণযোগ্যতার সীমা অতিক্রম করেছে।
সাক্ষাৎকারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে বলে মন্তব্য করেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ইইউ প্রশ্নাতীতভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে মস্কোর বিরুদ্ধে একটি ‘হাইব্রিড যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছে। ব্রাসেলসের নীতি শুধু ইইউ নাগরিকদের স্বার্থ ও মঙ্গলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আমাদের কোনো সমস্যা হয়নি।”
ওয়াশিংটনকে মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি নিয়ে আলোচনা করতে ইইউ দেশগুলোকে বাধা দেয়ার অভিযোগও করেন ল্যাভরভ। যদিও রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ কয়েক দশক ধরে ইউরোপকে অভূতপূর্ব সমৃদ্ধি দিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ল্যাভরভ বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাশিয়া আর স্বাভাবিকভাবে বাণিজ্য সম্পর্ক রাখবে না। ল্যাভরভ উদাহরণ দিয়ে বলেন, প্রাচীরের সঙ্গে মাথা ঠোকানোর কোনো ইচ্ছে আমাদের নেই।’ বরং ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে রাশিয়া আরও যত্নবান হবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ল্যাভরভ জানান, মস্কো ভবিষ্যতে আরও ‘বাস্তববাদী’ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘যদি কিছু রাজনীতিবিদ ইউরোপে নিজেদের প্রস্তুত করেন, যারা রাশিয়ার সঙ্গে সমান এবং পারস্পরিকভাবে অংশীদারত্বের সব সুবিধা বোঝেন, আমি নিশ্চিত করতে পারি, আমাদের পক্ষে কোনো সমস্যা থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাস্তববাদী। আমরা সেই কয়েকজন ইউরোপীয়র সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব, যারা রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব লালন করে। আমরা রুশোফোবিয়াদের সঙ্গে সহযোগিতা করব না।’