সিরিয়ায় হঠাৎ করেই মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দেশটির রাক্কায় ভয়াবহ হামলার পর আবারও জঙ্গিগোষ্ঠীটির উত্থানের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে রাক্কাজুড়ে নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি শুরু হয়েছে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান। খবর আল জাজিরার।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, গেল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সিরিয়ায় রাক্কায় কুর্দি সশস্ত্র বাহিনী সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সকে (এসডিএফ) লক্ষ্য করে চালানো হয় ভয়াবহ হামলা। এতে নিহত হন বেশ কয়েকজন। পরে ওই হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। দীর্ঘদিন পর জঙ্গিগোষ্ঠীটির এ ধরনের হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে নিরাপত্তা বাহিনী। দীর্ঘদিন পর জঙ্গিগোষ্ঠীটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠায় আরও হামলার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে আছি। দু-এক দিন গেলে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। তবে এভাবে যদি আরও হামলা চালানো হয় তখন বিপদ। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যাবে না। কাজ করতে পারব না। ঘরে বসে থাকতে হবে।’
আরেকজন বলেন, ‘সবার আগে আমাদের নিরাপত্তা দরকার। স্ত্রী-ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভালো থাকতে চাই। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে ধন্যবাদ, তারা আমাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সন্ত্রাসী হামলার পর সিরিয়ায় রাক্কায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। শহরজুড়ে কারফিউ জারির পাশাপাশি চলছে তল্লাশি অভিযান। সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করতে তৈরি করা হয়েছে যৌথ বাহিনী।
বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, এসডিএফের ওপর এই হামলা আইএসের শুরু মাত্র। বড় ধরনের হামলার জন্য জঙ্গিগোষ্ঠীটি প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানান তিনি। ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলা চালাতে বিভিন্ন জায়গায় পাঁচটির বেশি স্লিপার সেল তৈরি করেছে বলে দাবি এই কর্মকর্তার।
এসডিএফের মুখপাত্র আলী আল হাসান বলেন, ‘রাক্কার একটি কারাগারের কাছে হামলা চালানো হয়। সেখানে বন্দি থাকা আইএস সদস্যদের ছিনিয়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল। তবে সেটা সম্ভব হয়নি। গতকাল (সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর) থেকেই আমাদের যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। এলাকাজুড়ে এটি চলবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় পুরো রাক্কায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। যেকোনো ধরনের হামলা প্রতিহত করা হবে।’
মার্কিন অভিযানে ইরাকের সাদ্দাম সরকারের পতনের পর ২০১৩ সালে উত্থান ঘটে আইএসের। সিরিয়া ও ইরাকের একাংশ নিয়ে ঘোষণা করে ইসলামি খেলাফতের। দখল করে চলে ইরাক ও সিরিয়ার একের পর এক শহর। ২০১৫ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলে পতন ঘটতে থাকে আইএসের। দখলমুক্ত করা হয় ইরাকের মসুলসহ বেশির ভাগ শহর। বর্তমানে আইএসের প্রভাব না থাকলেও এ হামলা আবারও আইএসের উত্থানের শঙ্কা বাড়িয়েছে।