মানুষের হাতে টাকা আছে; তাদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে গাড়ি কেনা ও ব্যবহারের প্রবণতা অতিরিক্ত বেড়েছে বলে বাংলাদেশে যানজট প্রকট আকার ধারণ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবার প্রথম ধাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবার প্রথম ধাপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন তিনি।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যানজট বেড়েছে, কারণ মানুষের হাতে টাকা আছে, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে গাড়ি কেনা ও ব্যবহারের প্রবণতা অতিরিক্ত বেড়েছে। দেশের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, যদিও করোনার আগে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশে উন্নীত করেছিলাম। কিন্তু করোনার কারণে সেটা কিছুটা পিছিয়ে গেছে। তবুও এশিয়ার অনেক দেশের তুলনায় আমরা অনেক এগিয়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ ভালো থাকে, দেশের অর্থনীতি উন্নত হয়।
বক্তব্যের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের সশ্রদ্ধ সালাম জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার পথে। এ যাত্রায় দেশের মানুষের অবদান সবচেয়ে বেশি। তারা সহযোগিতা না করলে পদ্মা সেতু হতো না, মেট্রোরেল হতো না।
তিনি বলেন, আজকে প্রথম ফেস উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধন করেছি। বাকি কাজ শেষে মতিঝিল পর্যন্ত উদ্বোধন করব। মেট্রোরেল নিজেই একটি মাইলফলক। এটি প্রথম দেশের বৈদ্যুতিক রেল, দূরনিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। এটির সর্বোচ্চ গতি হবে প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার। এটি পরিবেশবান্ধব, তাই যুগোপযোগী একটি যান হবে মেট্রোরেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেছিলাম ঢাকার যানজট নিরসনে কাজ করব। আজকে মেট্রোরেল সেই মাইলফলক স্পর্শ করেছে। আরও কাজ চলছে, সমীক্ষা চলছে।
মেট্রো প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে ট্রেনিং অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর নতুন ১২ হাজার গ্র্যাজুয়েট ও মাঠ প্রকৌশলীর কর্মসংস্থান হবে। যেটা বেকারত্ব শুধু দূর করবে না, আমাদের দক্ষ জনশক্তিও গড়ে উঠবে। ফলে মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভর করতে হবে না। আমরা নিজেরাই সব পরিচালনা করতে পারব।
তিনি বলেন, মেট্রোরেলে নারীদের জন্য আলাদা কোচ থাকবে, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য সুব্যবস্থা থাকবে, শিশুদের পরিচর্যার ব্যবস্থা থাকবে মায়েদের জন্য। মুক্তিযোদ্ধারা বিনা পয়সায় ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন। এ সময় মেট্রোরেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
মেট্রোরেল সংরক্ষণের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক টাকা খরচ করে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেট্রোরেল গড়ে তোলা হয়েছে। তাই যারা ব্যবহার করবেন তারা একটু সচেতন হবেন। এর মান নিশ্চিত রাখা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করবেন। এ সময় সবাইকে অনুরোধ জানান তার কথাগুলো মেনে চলতে।