তেল রপ্তানিতে পশ্চিমাদের মূল্য বেঁধে দেয়া নিয়ে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাশিয়া। রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম আরটি জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দাম বেঁধে দেয়া দেশগুলোতে তেল বিক্রি নিষিদ্ধ করে একটি ডিক্রি জারি করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে রুশ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাশ্চাত্যের দেশগুলো তেলের মূল্য বেঁধে দিয়েছিল। এর জবাবে ওইসব দেশ ও কোম্পানির কাছে তেল বিক্রিই নিষিদ্ধ করে দিল রাশিয়া।
রাশিয়ান সরকারের ওয়েবসাইটের দেয়া তথ্য মতে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পাঁচ মাসের জন্য ওইসব দেশ ও কোম্পানির কাছে তেল ও তেলজাতসামগ্রী রফতানি নিষিদ্ধ করেছে। ১ জুলাই পর্যন্ত কার্যকর হবে। ডিক্রিতে বলা হয়েছে, পুতিনের বিশেষ সিদ্ধান্তে আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে তেল বিক্রির নিষেধাজ্ঞাতা প্রত্যাহার করা হতে পারে।
বিশ্বের প্রধান শক্তিগুলোর গ্রুপ অব সেভেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া চলতি মাসে সাগরে জাহাজ দিয়ে পরিবহন করা রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারদাম বেঁধে দেয়। এই ঘোষণা ৫ সেপ্টেম্বর কার্যকর হয়।
রাশিয়া যাতে উচ্চতর মূল্যে তৃতীয় দেশগুলোর কাছে তেল বিক্রি করতে না পারে, সে জন্যই পাশ্চাত্যের দেশগুলো এই দাম বেঁধে দিয়েছিল। এই দেশগুলোর দাবি অনুযায়ী কম টাকায় তেল বিক্রি হলে রাশিয়ার রাজস্বও হ্রাস পাবে। তবে রাশিয়া দৃঢ়ভাবে বলছে, তারা নতুন ক্রেতা খুঁজে নিতে পারবে এবং মূল্য বেঁধে দেয়ার কোনো প্রভাবই পড়বে না।
দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক বলেছেন, দেশটির রফতানিতে সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ান তেলের এখনও উচ্চ চাহিদা থাকবে। দামের সীমা আরোপ করার ফলে পশ্চিমা দেশগুলোতে আরও মুদ্রাস্ফীতি হবে। তিনি আরও জানান, পশ্চিমারা যা করেছে, এই ধরনের অ-বাজারব্যবস্থাকে অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে রাশিয়া।
এদিকে তেল ও গ্যাস বিশেষজ্ঞ ভাইচেস্লাভ মিশচেনকো জানান, পুতিনের এই নির্দেশের ফলে দ্রুত তেলের দাম বেড়ে যাবে। সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশ হচ্ছে রাশিয়া। তাদের তেল বিক্রিতে জটিলতা সৃষ্টি হলে বৈশ্বিক জ্বালানি সরবরাহে বড় ধরনের সমস্যা হয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।