আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের লক্ষ্য করে তালেবানের জারি করা নিষেধাজ্ঞা নীতির নিন্দা করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদ বলেছে, নারী শিক্ষার ওপর ক্রমবর্ধমান নিষেধাজ্ঞা ‘গভীরভাবে উদ্বেগজনক’।
এ ছাড়া নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানে নারীদের সব ক্ষেত্রে সমান এবং অর্থবহ অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন নিষেধাজ্ঞাগুলো অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, নারীদের ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা অযৌক্তিক এবং স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তিনি আরও লিখেছেন, নারীদের বাদ দেয়ার অর্থ হচ্ছে আফগান জনগণ অপরিসীম দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান আফগান নারীদের ভয়াবহ এই পরিণতির তীব্র নিন্দাও জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেছেন, কোনো দেশই তার অর্ধেক জনসংখ্যাকে বাদ দিয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে টিকে থাকতে পারে না। নারী এবং মেয়েদের ওপর এই দুর্বোধ্য বিধিনিষেধ কেবল সব আফগানের দুর্ভোগ বাড়িয়ে তুলবে না, বরং আফগানিস্তানের সীমানার বাইরেও ঝুঁকি তৈরি করবে বলে আমি আশঙ্কা করছি।’
তালেবানের এসব নীতি আফগান সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। ভলকার তুর্ক বলেছেন, ‘আমি আফগানিস্তানের তালেবান কর্তৃপক্ষকে সব নারী ও মেয়েদের অধিকারের প্রতি সম্মান এবং সুরক্ষা নিশ্চিতের অনুরোধ জানাচ্ছি। যাতে তাদের ‘দেখা যায়, শোনা যায় এবং দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জীবনের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখতে পারে।’
এদিকে নারীদের জন্যে কাজ করা নিষিদ্ধের পর ৫টি এনজিও আফগানিস্তানে সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। কেয়ার ইন্টারন্যাশনাল, নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল (এনআরসি) এবং সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে যে নারী কর্মী ছাড়া তাদের কাজ চালিয়ে যেতে পারবে না। এদিকে গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নারী শিক্ষার ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে অংশ নেওয়া পাঁচ নারীকে গ্রেফতার করেছে তালেবান সরকার। এ ছাড়া তিন সাংবাদিককেও গ্রেফতার করা হয়।
গত বছর আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ ফিরে নেয়ার পর থেকে, তালেবানরা ক্রমাগতভাবে নারীদের অধিকার সীমিত করেছে। তবে শাসন ক্ষমতা নেয়ার পর তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ১৯৯০ দশকের শাসনামলের চেয়ে নমনীয় হবেন।