শীত বাড়তে থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ে খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। আর সেই রস থেকে বাগানেই তৈরি করা হচ্ছে সুস্বাদু গুড়। পিঠাপুলি তৈরিতে খেঁজুর রসের খাঁটি গুড় কিনতে প্রতিদিন বাগানে ভিড় করছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
ভোরের আলো ফোটার আগেই গাছিরা ছুটছেন খেঁজুর গাছে বেঁধে রাখা মাটির হাঁড়িতে ফোঁটা ফোঁটা করে সংগ্রহ করা রস নামাতে। গাছ থেকে সংগ্রহ করা রস নামিয়ে একত্র করছেন। এরপর টিনের পাত্রে ঢালছেন ছাঁকনিতে করে। কয়েক ঘণ্টা জ্বালিয়ে রূপান্তরিত করা হচ্ছে গুড়ে। পরে টিনের পাত্র থেকে বাগান চত্বরে মাটির ছোট ছোট সাজানো পাত্রে ঢেলে কিছুক্ষণ ঠান্ডা করলেই পরিণত হয় ঢিকা গুড়ে। আর তৈরিকৃত সুস্বাদু গুড় ক্রয়ে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুণ এলাকায় অবস্থিত সুগারমিল কর্তৃপক্ষের রোপণকৃত ছয় শতাধিক খেজুর গাছ লিজ নিয়ে গাছ পরিচর্যার মাধ্যমে শীতজুড়ে গুড় উৎপাদন করছেন গাছিরা। শীতে পিঠাপুলি তৈরিতে খেজুর রসের খাঁটি গুড় সংগ্রহে ছুটছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, ভোর রাত থেকে রস নামিয়ে বাগানেই জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করায় বলা মুশকিল শুধু রস দিয়েই গুড় তৈরি হচ্ছে নাকি চিনি মিশ্রিত। তারপরেও মানুষ বিশ্বাস করে গুড় কিনছেন।
লিজ নেয়া ব্যক্তি মনিরুজ্জামান মনির বলেন, গুড়ে কোনো প্রকার ভেজাল দেয়া হয় না। এখন শীত বাড়ছে তাই গুড় উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভালো টাকা আয় হচ্ছে এখান থেকে।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, নারগুণ এলাকায় প্রতি বছরের মতো এবারো খেজুরের রস থেকে গুড় তৈরি করা হচ্ছে। তবে গুড়ে যেন ভেজাল মেশাতে না পারে সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে বলে জানান প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।
বাগান লিজ নেয়া ব্যক্তির তথ্যমতে, ছয় শতাধিক খেজুর গাছের রস থেকে প্রতিদিন ১২০ কেজি গুড় উৎপাদন করছেন। আর প্রতি কেজি গুড় বিক্রি করছেন ২৫০ টাকায়।