মির্জাগঞ্জ উপজেলা থেকে জেলা শহর পটুয়াখালী যেতে স্থলপথে একটি সড়ক রয়েছে। সেই সড়কের উপজেলা শহর সুবিদখালী থেকে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট পর্যন্ত বেহাল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় পিচ-খোয়া ও ইট উঠে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ।
এতে প্রায়ই ভারী যানবাহন আটকে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন চালক ও যাত্রীরা।
যানবাহনের চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুয়াকাটা-বরিশাল মহাসড়কে নির্ধারিত ওজনের অতিরিক্ত পণ্য বহনকারী যানবাহনকে লেবুখালীর পায়রা সেতুর ওজন মাপার যন্ত্র (ওয়ে স্কেল) পার হতে হয়। অতিরিক্ত পণ্য বহনের কারণে গুনতে হয় নির্ধারিত হারে জরিমানা। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে বিকল্প পথে যাতায়াত করেন চালকেরা। তাঁরা পায়রাকুঞ্জ ফেরি পার হয়ে বিনাপানি-কচুয়া-বেতাগী-পটুয়াখালী-মির্জাগঞ্জ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। এতে আঞ্চলিক সড়ক দ্রুত বেহাল হয়ে যাচ্ছে।
বিনাপানি-কচুয়া-বেতাগী-মির্জাগঞ্জ-পটুয়াখালী সড়কের দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে মির্জাগঞ্জ থেকে পটুয়াখালীর দূরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার।
গত শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, মির্জাগঞ্জ মাজার এলাকা থেকে ২০০ ফুট পূর্বে সড়কের মাঝবরাবর পণ্যবাহী দুটি ট্রাক আটকে আছে। সড়কের কয়েক স্থানে দুই পাশে ইট বিছিয়ে ঝুঁকি নিয়ে কোনোরকমে যানবাহন চলাচল করছে। পুরো সড়কে ধুলা।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, সড়কে ভারী যানবাহনের চাপ বেশি। সড়কের মির্জাগঞ্জ অংশে ইয়ার উদ্দিন খলিফা (রহ.) সেতুর ঢাল থেকে পায়রাকুঞ্জ ফেরিঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় নালা তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো যানবাহন সড়কের এসব নালায় আটকে যাচ্ছে। ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিশেষ করে কপালভেড়া, ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজার, পায়রাকুঞ্জ ও গোলদারবাড়ির সামনের সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
শামীম হোসেন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, ‘গলাচিপা থেকে ধান বোঝাই করে এ সড়ক দিয়ে রংপুর যাচ্ছিলাম। সড়কের কিছু জায়গা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। গত সপ্তাহে সড়কের কাদায় একবার আটকে ছিলাম সাত-আট ঘণ্টা। আবারও আটকে গেলাম।’
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, অতিরিক্ত ওজনের পণ্যবাহী ভারী যানবাহন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পায়রা নদীর ফেরি পারাপার হয়ে এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করছে। সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে। মেরামত করেও ঠিক রাখা যায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাকের এক চালক বলেন, অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে চলাচল করতে হয়। বিভিন্ন স্থানে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া ফেরিতেও গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। এরপর লেবুখালী ওজন সেতুর মুখোমুখি হলে গুনতে হয় জরিমানা। অতিরিক্ত ওজনের পরিবহনগুলো এ আঞ্চলিক পথ বেছে নেয়।
এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ এম আতিকুল্লাহ বলেন, সড়কের মির্জাগঞ্জ অংশের বেশ কিছু অংশ নষ্ট হয়ে গেছে। পণ্যবাহী কিছু যানবাহন প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বা ম্যানেজ করে চলাচল করায় সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত ওজন বহনকারী যানবাহন পারাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ফেরির ইজারাদারকে চিঠি দেওয়া হবে। সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।