এক যুগ পর আবারও ফিরে এল প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা। মাসখানেক আগে হুট করে নতুন পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তড়িঘড়ি করে তারিখ ঘোষণাকে অপরিকল্পিত বলছেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। আর শিক্ষাবিদরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা কমানোর কথা বলা হলেও হুট করে এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ বাড়বে।
সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে। ২০০৮ সালে সবশেষ এই পরীক্ষা হয়েছিল।
পরের বছর ২০০৯ সাল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা চালু হলে বাদ হয়ে যায় প্রাথমিকে বৃত্তি পরীক্ষা। সমাপনী পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে দেয়া হতো বৃত্তি। করোনার কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি প্রাথমিকের সমাপনী পরীক্ষা।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের ওপর পরীক্ষার চাপ কমাতে নানা মহল থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করার দাবি উঠলেও গত ২৮ নভেম্বর হুট করেই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আবারও এক যুগের আগের সেই বৃত্তি পরীক্ষা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বলা হয়, মোট শিক্ষার্থীর ২০ শতাংশকে বসতে হবে এই পরীক্ষায়।
বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের জানানো হয় এবারই হবে বৃত্তি পরীক্ষা। ফলে শিক্ষার্থীদের আলাদা দুটি পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে। আর শুধু বার্ষিক নয়, নতুন করে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাসও পড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
একই সময়ে একদিকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া, তার ওপর বৃত্তি পরীক্ষা। তাই সন্তানদের নিয়ে বিপাকে অভিভাবকরা। আর শিক্ষকরা বলছেন, বার্ষিক পরীক্ষা পরবর্তী ছুটিতে শিক্ষার্থীদের ওপর বৃত্তি পরীক্ষার বোঝা ভালো ফল বয়ে আনবে না।
প্রাথমিক পর্যায়ে কেবল বিদ্যালয়ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতির ওপর জোর দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলছেন, বৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে। নতুন পরীক্ষার সুযোগে সম্প্রসারিত হবে নোট-গাইডের বাজার ও কোচিং বাণিজ্য। পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে তড়িঘড়ি করে তারিখ ঘোষণা অপরিকল্পিত।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, সাধারণ গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান- এই চারটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।