এই প্রজন্মের খেলোয়ারদের মধ্যে সেরা স্ট্রাইকার কে? – বেশিরভাগের উত্তরে আসে কিলিয়ান এমবাপ্পে কিংবা আর্লিং হলান্ডের নাম। সবশেষ কাতার বিশ্বকাপেও গোল্ডেন বুট জিতে নামের প্রতি সুবিচার করেছেন এমবাপ্পে। হলান্ড নিখাদ নম্বর নাইন হলেও এমবাপ্পে অবশ্য পুরোপুরি স্ট্রাইকার নন, খেলেন উইংয়ের বাঁ প্রান্তে। আগামীর ফুটবল বিশ্বে রাজত্বটা এই দুজন করবে বলেই মত বেশিভাগের। তবে চিলির সাবেক ফরোয়ার্ড ইভান জামোরানো তাদের চেয়েও ভালো বলে দাবি করেছেন এক আর্জেন্টাইনকে।
নিজের প্রজন্মের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড হিসেবেই পরিচিতি চিলির কিংবদন্তি ইভান জামোরানোর। ক্যারিয়ারের সেরা সময়ে খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ ও ইন্টার মিলানের মতো বিশ্বসেরা ক্লাবে। তিনি দাবি করেছেন, এই সময়ের স্ট্রাইকারদের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপ্পে বা আর্লিং হলান্ড সেরা নন, বরং আর্জেন্টিনার হুলিয়েন আলভারেজই সেরা।
আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ওলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চিলির হয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে খেলা এই সেন্টার ফরোয়ার্ড বলেন, ‘একজন পুরনো ধাঁচের সেন্টার ফরোয়ার্ড হিসেবেও বলছি, এই সময়ের স্ট্রাইকারদের মধ্যে সবচেয়ে আক্রমণাত্মক স্ট্রাইকার হুলিয়ান আলভারেজ।’
রিভারপ্লেট থেকে এই মৌসুমের শুরুতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেওয়া আলভারেজ বিশ্বকাপের শুরুতে আর্জেন্টিনার শুরুর একাদশে ছিলেন না। তবে লাউতারো মার্টিনেজের অফফর্মের সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুতই একাদশের অপরিহার্য সদস্যে পরিণত হন। সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জোড়া গোলসহ ৪ গোল করেন তিনি। এর মধ্যে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একক প্রচেষ্টায় করা গোলটির সঙ্গে অনেকেই খুঁজে পাচ্ছেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা ডিয়েগো ম্যারাডোনার দ্বিতীয় গোলটির।
জামোরানোর চোখে আলভারেজের গোল করার ক্ষমতাই শুধু নয়, ভালো লেগেছে খেলার ধরণও। আক্রমণভাগের যে কোনো জায়গায় স্বাচ্ছন্দের সঙ্গে খেলতে পারেন আলভারেজ। ২২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার সম্পর্কে জামোরানো বলেন, ‘ছেলেটা সব জায়গাতেই ভালো খেলতে পারে। উইংয়ে খুবই ভালো খেলেছে। নিজেদের অর্ধেও ভালো, বলা যায় দলের প্রথম ডিফেন্ডার। বাকিদের সঙ্গে দারুণ লিঙ্কআপ করতে পারে, মাথার ব্যবহারেও ভালো। ডান-বাঁ’ দু’পায়েই শট নিতে জানে। স্বল্প কিংবা দীর্ঘ -উভয় দূরত্বে খেলার মতো শারীরিক শক্তিও আছে। এ সবই আমরা ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে একক প্রচেষ্টায় করা গোলে দেখেছি।’
২০১৮ বিশ্বকাপে ১৯ বছর বয়সী এমবাপ্পে ৪ গোল করে ২০ বছর পর ফ্রান্সকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করতে দারুণ ভূমিকা রাখেন। কাতার বিশ্বকাপেও ৮ গোল করে ফাইনালে তুলেছিলেন দলকে। এছাড়া ক্লাব পিএসজির হয়েও দারুণ পারফর্ম করছেন তিনি। অন্যদিকে সময়ের আরেক সেরা স্ট্রাইকার আর্লিং হলান্ডের দল নরওয়ে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে পারেনি। তবে ক্লাবের হয়ে দারুণ পারফর্ম করেছেন তিনি। এই মৌসুমে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিয়ে ১৯ ম্যাচেই করেছেন ২৪ গোল। আলভারেজও সিটিতে খেললেও এখনো একাদশে নিয়মিত হতে পারেননি।
এ দুজনের চেয়ে আলভারেজকে এগিয়ে রাখার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন জামোরানো। তিনি বলেন, ‘হলান্ড উইঙ্গার হিসেবে খুব একটা ভালো করেন না। আর এমবাপ্পেকে আমর কাছে নাম্বার নাইন হিসেবে খুব একটা সক্রিয় লাগে না । আলভারেজ এর সবই করতে পারে। নিঃসন্দেহে সে আর্জেন্টাইন ফুটবলের ভবিষ্যৎ।’