ইরানে হিজাববিরোধী আন্দোলন ‘সেঞ্চুরি’ পূর্ণ করেছে। গত সেপ্টেম্বরে নীতি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাসা আমিনির মৃত্যুতে ফুঁসে ওঠে দেশটির জনগণ। মাসার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ একপর্যায়ে রূপ নেয় সরকারবিরোধী আন্দোলনে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ১০০ দিনে গড়িয়েছে ইরানের হিজাববিরোধী বিক্ষোভ। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘমেয়াদি সরকারবিরোধী আন্দোলন হয়ে দাঁড়িয়েছে এটি। এর আগেও এ ধরনের বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছে তেহরান। তবে ২০১৭ এবং ২০১৯ সালের বিক্ষোভের তুলনায় এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ আলাদা। পোশাকের স্বাধীনতার জন্য রাস্তায় নেমে আসেন দেশটির নারীরা। তাদের সঙ্গে সংহতি জানান ইরানের তারকারা। বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে কারাবরণও করেন অনেকে।
তারানেহ আলিদোস্তি তাদেরই একজন। জনপ্রিয় এই চিত্রনায়িকা মাসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে হিজাব ছাড়া ছবি পোস্ট করেন। এ কারণে তাকে আটক করে ইরানি পুলিশ। দেশ ছেড়ে যাওয়া আরেক অভিনেত্রী পেগাহ আহানগারানি জানান, ইরানের সমাজব্যবস্থা আর আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারবে না। এদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লা খামেনিকে স্বৈরাচারী শাসক বলে মন্তব্য করেন হামিদ ফারোখনেজাদ নামের অন্য এক অভিনেত্রী। পাশাপাশি খামেনিকে ফ্রাঙ্কো, স্টানিল ও মুসোলিনিদের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।
শুধু তারকারা নন, ইরানের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছেন চলমান এ আন্দোলনে। বর্তমানে দুবাইয়ে বসবাস করা ইরানের সাবেক ফুটবলার আলী কারিমি সমর্থন জানিয়েছেন এ বিক্ষোভে। এ ঘটনার পর থেকেই ইরানি গোয়েন্দারা তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ আছে। পরে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। বিক্ষোভে সহিংসতা ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিতের দায়ে এরই মধ্যে দুজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। যদিও একে আইনের অপপ্রয়োগ বলছে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো।