হামিদুর রহমান জাতীয় ইয়ুথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে ৭টি স্বর্ণ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বিকেএসপি। এবারের আসর থেকে ওঠে আসা শুটারদের নিয়ে এক মাসের মধ্যে শুরু হবে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের আগে ব্যস্ত সূচিতে ঠাসা দেশের শুটিং। এরমধ্যেও নবীন খেলোয়াড়দের দিকে দেয়া হবে বাড়তি নজর। জানিয়েছেন মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপু।
পৌষের শীতের তীব্র ঠান্ডার সকালেও উত্তাপ বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনে। একঝাঁক উদীয়মান শুটারের পদচারণায় মুখর চরপাশ। ভবিষ্যতের শুটার অন্বেশন শুরু হওয়া হামিদুর রহমান জাতীয় ইয়ুথ শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপের শেষ দিন রোববারও (২৫ ডিসেম্বর) ছিল তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা।
ম্যাচ এয়ার রাইফেল অনূর্ধ্ব- ১৮ বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতার ফাইনালে শেষ মুহূর্তের স্নায়ুর লড়াইয়ে দুই প্রতিযোগী। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বিকেএসপির হৃদয় আহম্মদকে হারিয়ে স্বর্ণ জিতে নেন একই প্রতিষ্ঠানের ইনতিশার আহমেদ রাফি। এ ইভেন্টে ব্রোঞ্জও পেয়েছে বিকেএসপির ইনতেশামুল হুদা খান।
রাফির মতো এতটা মসৃণ ছিল না মিনার যাত্রা। সমাজে নানা বাঁকা কথা সহ্য করেও সাফল্যের পথে হেঁটেছেন। হামিদুর রহমান ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপের সাফল্য নিজেকে আরও এগিয়ে নিতে চান এই শুটার।
রাফি তিনি বলেন, ‘জীবনে প্রথম পদক পেলাম। অনুভূতি তো নিঃসন্দেহে অসাধারণ।’
মিনা বলেন, ‘অনেকেই বলতেন যে মেয়ে কীভাবে শুটিং করবে। মেয়েদের দ্বারা এটা হবে না। তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়াটাই ভালো হবে। কিন্তু আমার বাবা-মাসহ পুরো পরিবারই আমার পাশে ছিল। আমার বাবা সাহস দেয়ায় এতটুকু আসতে পেরেছি।’
২০১৫ সাল থেকে নবীনদের জন্য আয়োজিত হয়ে আসছে এই আসর। একটা সময় দেশের অনতম সফল ফেডারেশন হিসেবে বেশ সুখ্যাতি ছিল শুটিংয়ের। গত কয়েক বছর সে সাফল্যে কিছুটা ভাটা পড়েছে। মেধাবী শুটার তৈরিতেও তাই বেশি জোরেশোরে নেমেছে ফেডারেশন। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের আগে ২০২৩ সালটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেশনের কাছে। ব্যস্ত সূচিতে ঠাসা দেশের শটিং। এরমধ্যেও এ আসর থেকে উঠে আসা নবীনদের দেয়া হবে উন্নত প্রশিক্ষণ। দেশের বাইরে ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপেও থাকবে অংশ নেয়ার সুযোগ।
শুটিং ফেডারেশনের মহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপু বলেন, ‘পদকজয়ীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করব। তাদের আরও উন্নত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলানোর চেষ্টা করা হবে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে। অলিম্পিককে টার্গেট করে আমরা আগাচ্ছি।’ অলিম্পিকের জন্য ২০২৩ সালটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। এই বছরটাতে আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে অনুশীলন করতে হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে গেমস খেলতে হবে। আর প্রশিক্ষণও নিতে হবে।’
৯টি ক্লাবের অংশগ্রহণে আয়োজিত এবারের আসরে আলো ছড়িয়েছে বিকেএসপি। তাদের ধারেকাছেও নেই অন্য ক্লাবগুলো। তাইতো শুটিংয়ের সোনালি অতীত ফেরাতে পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর তাগিদ দিয়েছেন কমনওয়েলথে স্বর্ণজয়ী শুটার আসিফ হোসেন খান। নবীনদের জন্য পরিকল্পনা নিয়ে আগানোর তাগিদ তার।
আসিফ হোসেন খান বলেন, ‘অস্ত্র ও গুলি পর্যাপ্ত পরিমাণে দেয়ার চেষ্টা করছে ফেডারেশন। নবীনদের জন্য অতিরিক্ত কিছু সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনাও তারা করেছেন। এমনটা হলে আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে জাতীয় দল সমৃদ্ধ হয়ে যাবে বলে আশা রাখি।’