লিওনেল মেসির ক্যারিয়ারের অপূর্ণতা বলতে বিশ্বকাপের শিরোপাটা ছুঁয়ে দেখাই বাকি ছিল। কাতার বিশ্বকাপে শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পর আর্জেন্টাইন মহাতারকার ক্যারিয়ার যে পূর্ণতা পেয়েছে তা বলাই যায়। স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক জানিয়েছেন তার দেখা ফুটবলারদের মধ্যে মেসিই সেরা। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কোচ থাকাকালীন মেসিকে স্পেন দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার কথাও।
২০১০ বিশ্বকাপে স্পেনের গোল্ডেন জেনারেশন তাদের ইতিহাসের প্রথম ও একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপা জেতে। সে দলের কোচ ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক কোচ ভিসেন্তে দেল বস্ক। ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা সেই দলে অধিকাংশই ছিলেন বার্সেলোনার খেলোয়াড়। দারুণ খেললেও সে দলের দূর্বলতা বলতে অনেকেই বলেছিলেন একজন লিওনেল মেসির অভাব। আশ্চর্য হলেও সত্য, স্পেনের সে দলে হয়ত খেলতে দেখা যেতে পারত আর্জেন্টিনার বর্তমান অধিনায়ককে। তেমনটাই জানিয়েছেন স্পেনের সাবেক এই কোচ।
ক্লাব ক্যারিয়ারে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাঠ মাতানো এই কোচ পরবর্তীতে কোচিং করিয়েছেন ক্লাবটিতে। এরপর তুর্কিয়ের ক্লাব বেসিকতাস ঘুরে ২০০৮ সালে স্পেনের কোচ হন। রিয়াল মাদ্রিদের আঁতুড়ঘর থেকে বেড়ে উঠলেও মেসির প্রশংসায় সবসময়ই পঞ্চমুখ দেল বস্ক। আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের পর আরও একবার তার কণ্ঠে ঝরেছে মেসির জন্য প্রশংসাসূচক বাক্য। তার দেখা খেলোয়াড়দের মধ্যে মেসিকেই দিয়েছেন সেরার খেতাব। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, তিনি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর মেসির মধ্যে মেসিকেই বেছে নিবেন।
রেডিও মার্কাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই স্প্যানিশ কিংবদন্তী বলেন, ‘আমার দেখা সেরা খেলোয়াড় মেসি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ও মেসির মধ্যে আমি মেসিকেই বেছে নিবো।’
তিনি যোগ করেন, ‘যে সকল ফুটবলারকে আমি দীর্ঘদিন থেকে দেখছি , আমার কাছে ধারাবাহিকতা ও খেলোয়াড় হিসেবে তার মানের জন্য তাকে বিশেষ কিছু মনে হয়েছে। তিনি কিছু অসাধারণ মৌসুম কাটিয়েছেন এবং সবসময় তার দলকে সামনে এগিয়ে নিয়েছেন।’
মেসি যখন বার্সেলোনার হয়ে নিজেকে মেলে ধরছে তখন স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ) তাকে স্পেন দলে ভেড়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়েছিল বলেও জানান এই কোচ। স্প্যানিশ পাসপোর্ট ও বংশগতভাবে কাতালুনিয়ান সংযোগ থাকায় মেসির সামনে সুযোগ ছিল স্পেনের হয়েও আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রতিনিধিত্ব করার। তবে মেসি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নিজের মাতৃভূমির হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন।
দেল বস্ক বলেন, ‘মেসিকে স্পেনের হয়ে খেলানোর জন্য আমি সম্ভাব্য সবকিছু করেছি। যাইহোক, লিওনেল (মেসি) তা ফিরিয়ে দেয় কারণ সে তার দেশকে ভালোবাসতো।’
স্পেনের সে দলের হয়ে খেলার সুযোগ লুফে নিলে মেসি হয়ত আরও এক যুগ আগেই বিশ্বকাপ শিরোপা ছুঁয়ে দেখার সুযোগ পেতেন। তবে আর্জেন্টিনাকে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা এনে দিয়ে মেসি এখন আর্জেন্টিনায় জাতীয় বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন।