ফ্রান্সের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে কাতার বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে এক সপ্তাহ পরও থামছে না বিতর্ক। ম্যাচটি পুনারায় খেলার দাবিতে পিটিশন করেছেন ফরাসি সমর্থকরা। এবার সেই ইস্যুতে পাল্টা পিটিশন দায়ের করেছেন আর্জেন্টাইনরাও।
লুসাইল স্টেডিয়ামে গত ১৮ ডিসেম্বর শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের শেষে ৩-৩ গোলে সমতা থাকলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতে নেয় লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। দারুণ রোমাঞ্চে ভরা ওই ফাইনালের পর ডালপালা মেলে বিতর্ক। শিরোপা নিশ্চিতের ম্যাচটিতে রেফারির কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফ্রান্সের সমর্থকরা।
শিরোপা হাতছাড়া হওয়া সেই ম্যাচে পোলিশ রেফারি সিমন মারচিনিয়াকের কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে অসন্তোষের সৃষ্টি হয় ফ্রান্স সমর্থকদের মধ্যে। শিরোপা জেতার ম্যাচে আর্জেন্টিনার তৃতীয় ও মেসির করা দ্বিতীয় গোলটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে। ফ্রান্সের গণমাধ্যম ‘এল-ইকুইপ’ দাবি করে, আর্জেন্টিনার তৃতীয় গোলটি অবৈধ ছিল। কারণ গোল হওয়ার সময় মাঠে আর্জেন্টাইন বদলি খেলোয়াড়েরা ঢুকে পড়েছিলেন।
এছাড়া, ম্যাচের ২৩ মিনিটে মারচিনিয়াকের দেয়া পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক চলছে। ফ্রান্স সমর্থকদের মতে, ডি মারিয়াকে ফাউল করেননি দেম্বেলে। উল্টো ৩৬তম মিনিটে ডি মারিয়ার গোলের আগে ফাউলের শিকার হয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। কিন্তু রেফারি তা দেখেননি। তাই ফাইনাল ম্যাচটি আবারও খেলার দাবিতে পিটিশন করেন ফ্রান্স সমর্থকরা।
অনলাইনে পিটিশনের প্ল্যাটফর্ম ‘মেসওপিনিয়নস’-এ পিটিশন করেছেন ফ্রান্স সমর্থকরা। আবার হোক ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ! শিরোনামের পিটিশনে বলা হয়, ‘রেফারিকে কিনে নেয়া হয়েছিল, পেনাল্টিটি হয় না + দ্বিতীয় গোলের আগে এমবাপ্পে ফাউলের শিকার হন। ম্যাচটি পুনরায় খেলার দাবিতে সই করুন।’
ফরাসিদের ‘মামা বাড়ির এমন আবদারে’ চুপ করে বসে নেই আর্জেন্টাইনরাও। পাল্টা পিটিশন দায়ের করেছেন তারাও। ফরাসিদের ‘কান্না’ বন্ধ দেখতে চান বিশ্বকাপজয়ী দলটির সমর্থকরা। এজন্য অনলাইন প্ল্যাটটফর্ম চেঞ্জ ডট অর্গে চলছে স্বাক্ষর সংগ্রহ। ভ্যালেন্তিন গোমেজ নামের এক ব্যক্তির চালু করা এই পিটিশনে ৬ লাখের বেশি মানুষ সই করেছেন।
‘ফ্রান্স স্টপ ক্রায়িং’শিরোনামের পিটিশনে বলা হয়েছে, ‘আমরা বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে ফরাসিদের কান্না থামছে না। আর্জেন্টিনাকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন না মেনে তারা অভিযোগ করে যাচ্ছে। তাই আমাদের এই পিটিশনের লক্ষ্য হচ্ছে, ফ্রান্সের কান্না থামানো। সেইসঙ্গে তাদের এটা মেনে নেয়া যে মেসিই ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়, আর কিলিয়ান এমবাপ্পে তার পুত্র’।
আর্জেন্টিনার পিটিশনটি মেসওপিনিয়নসেও দায়ের করা হয়েছে। আর ফরাসিদের পিটিশনটিতে রোববার (২৫ ডিসম্বর) সকাল পর্যন্ত ২ লাখ ২৬ হাজার মানুষ সই করেন।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ৫ লাখ সই টপকে গেলে পিটিশনটি ফরাসি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সর্বোচ্চ সই পাওয়া তিনটি পিটিশনের একটি হবে। পিটিশনে সই করা বেশির ভাগ নাগরিকই ফ্রান্সের এবং মন্তব্যসংখ্যা রোববার ৯৪ হাজার ছাড়িয়েছে।