বিশ্বজয়ের উৎসবের জোয়ারে ভাসছে লিওনেল মেসির পরিবার। আনন্দের মাত্রা বাড়াতে জমকালো আয়োজনে বড়দিন কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক। এর মাঝেই একটি গল্প মন ছুঁয়ে গেল আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের। সেই গল্প শুনে স্ত্রীর সঙ্গে কাঁদলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর। গল্পটি আর কারও নয়, মেসির নিজের জীবনেরই।
ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ও ৩ সন্তান রয়েছে মেসির। ছোটবেলার বান্ধবী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে ২০১৭ সালে বিয়ে করেন তিনি। ফুটবলের বাইরে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ভালোবাসেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। বিশ্বজয়ের আনন্দের জোয়ারে ভাসছে মেসির পরিবার। তাই বিশেষভাবে বড়দিন পালনের পরিকল্পনা করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনায় দীর্ঘদিন একসঙ্গে খেলেছেন মেসি-সুয়ারেস। চোখের জলে কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ। কিন্তু তার প্রিয়বন্ধু মেসি জিতে নিয়েছেন বিশ্বকাপ। আগামী রোববার (২৫ ডিসেম্বর) খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীদের অন্যতম বড় উৎসব বড়দিন। বিশেষ এই দিনে মেসির আনন্দ বাড়িয়ে গিতে রোজারিওতে গিয়েছেন সুয়ারেজ। সঙ্গে স্ত্রী সোফিয়া বালবি ও সন্তানদেরও নিয়ে এসেছেন সুয়ারেজ। এ বারের বড়দিনে মেসির বিশেষ অতিথি সপরিবার সুয়ারেজ। রোজারিওর বাড়িতে বড়দিন প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে কাটানোর পরিকল্পনা করেছেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
তবে শুধু সুয়ারেজ ও তার পরিবারই নয়, মেসির বড়দিনের পার্টিতে আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকায় রয়েছেন আরও কয়েকজন পরিচিত ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব। তারা হলেন, আর্জেন্টিনার সাবেক তারকা সের্হিও আগুয়েরো ও স্পেনের সাবেক তারকা আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাও। পার্টিতে দেখা যেতে পারে বিশ্বজয়ী দলের একাধিক সতীর্থকেও। এমন আনন্দকে সামনে রেখে নিজের জীবনের কাঁটা বিছানো গল্প শুনে আপ্লুত হয়েছেন মেসি, ভিজেছে তার এবং আন্তোনেল্লার চোখও।
আর্জেন্টিনার রেডিও স্টেশন ‘আরবানা প্লে’-তে মেসির জীবনকাহিনী শোনানো হয়। মেসির জীবনের ভিত্তিতে তৈরি করে সেই অনুষ্ঠানের নাম দেয়া হয় ‘লিওনেলের স্যুটকেস’। ছোটবেলায় আর্জেন্টিনা ছেড়ে বার্সেলোনায় চলে যাওয়া, সেখানে বেড়ে উঠা এবং বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার হয়ে ওঠা- সব খুঁটিনাটি ঘটনাই তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে। সেই গল্পটি লিখেছেন প্রখ্যাত লেখক হারনান কাসসিয়ারি। শুধু তাই নয়, ক্যারিয়ারে যে যে কঠিন পরিস্থিতির সামনে পড়তে হয়েছে মেসিকে, সবই তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন সুন্দরভাবে।
স্ত্রী আন্তোনেল্লার সঙ্গে সকালে হাঁটতে বের হয়ে সেই অনুষ্ঠান শোনেন মেসি। দুজনেই কেঁদে ফেলেন। এর পরেই মেসি ধন্যবাদ জানান গল্পলেখককে। তাকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ভয়েস নোট পাঠান।
মেসি বলেন, ‘হারনান যা তুলে ধরেছে, তা শুনে আমি আর আমার স্ত্রী কাঁদতে শুরু করেছি। কারণ, সে যা বলেছে সব সত্যি। তোমাদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই। দুজনকেই ধন্যবাদ। আমি ও আন্তোনেলা রোজারিওতে এটা শুনেছি এবং আমরা আপ্লুত হয়েছি। এটা আমি তোমাদের জানাতে চেয়েছি। তোমাদের জন্য বড় একটি আলিঙ্গন। আবারও ধন্যবাদ।’
সেই বার্তায় মেসি জানিয়েছেন, কুসনেজফের অনুষ্ঠানে ৯ মিনিট ধরে কাসিয়ারির গল্পটা শুনে তিনি এবং আন্তোনেল্লা কেঁদেছেন। লেখক কাসসিয়ারিও মেসির বার্তা পেয়ে কেঁদে দেন। একই অবস্থা অনুষ্ঠানটির সঞ্চালক কুসনেজফকের।