ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হলেও পাকিস্তানকে হালকাভাবে নিতে নারাজ নিউজিল্যান্ড শিবির। বক্সিং ডে টেস্টের আগে করাচিতে প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে এ মন্তব্য করেছেন কিউই কোচ গ্যারি স্টেড। অধিনায়ক বদলালেও খেলার ধরনে কোনো পরিবর্তন আসবে না বলেও নিশ্চয়তা দিয়েছেন তিনি। আর ঘরের মাঠে সিরিজ হারের পাশাপাশি, বোর্ডের চেয়ারম্যান বদল নিয়ে অস্থির এক সময় পার করছে পাকিস্তান ক্রিকেট। যদিও তার প্রভাব মাঠে থাকবে না বলেই বিশ্বাস সফরকারীদের।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর, বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তানে সিরিজ খেলতে যায় নিউজিল্যান্ড। চারদিক থেকে নানামুখী আলোচনা হতে থাকে সে সিরিজ ঘিরে। থ্রেট মেসেজ এবং কলের কথাও শোনা যায় নানা মাধ্যমে। কিন্তু ম্যাচের আগ পর্যন্ত খেলা নিয়ে কোনো বিকল্প ভাবনা ছিল না কোনো দলের মাঝেই।
তবে ঝামেলাটা শুরু হয় ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে। হঠাৎই ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় নিউজিল্যান্ড। কারণ হিসেবে বলা হয়, নিরাপত্তা হুমকির কথা। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) তৎকালীন চেয়ারম্যান রমিজ রাজার আশ্বাসের পরও আর পাকিস্তানে থাকতে রাজি হয়নি কিউইরা। বাক্স পেটরা গুছিয়ে চলে যায় পাকিস্তান থেকে। দুবাইয়ে আইপিএলের পর তারা অংশ নেয় বিশ্বকাপে।
সে থেকে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের ওপর নাখোশ ছিল পিসিবি। পরে অবশ্য বরফ গলে দু’দেশের মাঝে। সিরিজের ক্ষতিপূরণ হিসেবে নতুন করে সিরিজের সূচি সাজানো হয় দু’পক্ষের সম্মতিতে। এবার সে সিরিজ খেলতেই পাকিস্তান এসেছে ওশেনিয়ার দলটা।
কিন্তু এবারও খুব একতা স্থিতিশীল নয় পাকিস্তানের ক্রিকেট। যদিও নিরাপত্তা নিয়ে এবার আর কোনো অভিযোগ নেই সফরকারীদের। মূলত সরকার বদলের পর এবার পিসিবির চেহারা বদলে যাওয়ায় কিছুটা বিপাকে পাকিস্তান ক্রিকেট। সঙ্গে মাঠের দুর্বল পারফরম্যান্স তো রয়েছেই।
কিন্তু এসব নিয়ে ভাবতে চান না নিউজিল্যান্ড বস। নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে শুরুটা করতে চান জয় দিয়ে। সে লক্ষ্যে করাচিতে করেছেন অনুশীলন। উইকেট কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার চ্যালেঞ্জটা একটু বেশি। কারণ বক্সিং ডেতেই যে নামতে হবে মাঠে।
কিউই কোচ বলেন, ‘আমি যে দলটা নিয়ে এখানে এসেছি, তারা কেউ নতুন নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে তাদের যোগসাজশ দীর্ঘদিনের। কেইন জায়গা ছেড়ে দিয়েছে, এটাও অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। আমরা জানতাম এরকম কিছু একটা হবে। কেউ সারাজীবন এক জায়গায় থাকবে না। সাউদি দুর্দান্ত একজন ক্রিকেটার। তার ক্রিকেট ব্রেইন অসাধারণ। আমার মনে হয় না দল পরিচালনায় তার কোনো সমস্যা হবে। সে যে মানের ক্রিকেটার, খুব দ্রুতই সব মানিয়ে নেবে। আর দিন শেষে দেশের জন্য খেলাটা সবার জন্যই গর্বের।’
নিউজিল্যান্ড যখন অনুশীলনে সময় পার করছে করাচিতে, তখন অস্থির পাকিস্তান দল। পিসিবিতে বদল ছাড়াও, মাঠের ক্রিকেটে ছন্নছাড়া সাকলাইন মোস্তাক বাহিনী। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্টে হার নাড়িয়ে দিয়েছে দলের আত্মবিশ্বাসটা। যদিও, প্রতিপক্ষের এই দুর্বলতা নিয়ে খুব একটা ভাবছে না ব্ল্যাকক্যাপরা। আহত বাঘ কতটা ভয়ানক হয় তা ভালোই জানা আছে নিউজিল্যান্ড দলের। তাই তো, নিজেদের স্কিল নিয়েই ব্যস্ত ওশেনিয়ানরা।
গ্যারি স্টেড বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যা হয়েছে, সেটা আমাদের সঙ্গেও হবে সেটা আমি মনে করি না। পাকিস্তান ঘরের মাঠে দুর্দান্ত একটা দল। তাদের ক্রিকেটাররা সবাই মুখিয়ে আছে এ সিরিজ দিয়ে নিজেদের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে। ওদের বোর্ডেও শুনেছি কিছু ঝামেলা চলছে। তবে মাঠে কখনই এসব প্রভাব ফেলে না। আমিও সেসব নিয়ে ভাবতে চাই না। আমার টার্গেট নিজেদের স্কিল ডেভেলাপ করা।’
এ সিরিজে দুটি টেস্ট খেলবে নিউজিল্যান্ড এবং পাকিস্তান। পরে তিনটি ওয়ানডেও খেলার কথা রয়েছে দু’দলের।