২০ জনেরও বেশি পর্যটককে হত্যার দায়ে আজীবন কারাবাসে থাকা আলোচিত খুনি চার্লস শোভরাজকে মুক্তি দেবে নেপাল। এক পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট দেশটির সরকারকে শোভরাজকে ছেড়ে দিয়ে ফ্রান্সে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
২০০৩ সাল থেকে নেপালের হাই সিকিউরিটি জেলে বন্দি ছিলেন শোভরাজ। ১৯৭৫ সালে মার্কিন পর্বতোরোহী কোনি জো ব্রঞ্জি ও কানাডিয়ান নাগরিক লরেন্ট কেরিয়ারকে হত্যার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দেশে অনেক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ৭৮ বছর বয়সী শোভরাজের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অধিকাংশ সময়ই ব্যাকপ্যাকযুক্ত পর্যটকদের টার্গেট করতেন শোভরাজ। তাদের এমনভাবে হত্যা করতেন যেন কোনো প্রমাণ পাওয়া না যায়।
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি থাইল্যান্ডের পাতায়ায় ছয়জন নারীকে মাদক সেবন ও হত্যার অভিযোগে শোভরাজের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বের হয়। কিন্তু থাইল্যান্ড থেকে তিনি পালিয়ে যান। পরে ১৯৭৬ সালে ভারতে প্রথম গ্রেফতার হন। এরপর প্রায় ২০ বছর জেলে ছিলেন তিনি। মাঝে ১৯৮৬ সালে ছদ্মবেশ ধারণ করে জেল থেকে পালিয়েছিলেন শোভরাজ। তবে কিছুদিনের মধ্যেই আবার গ্রেফতার হন।
ভারতে পুরো সময় শাস্তি ভোগ করার পর ২০০৩ সালে নেপালে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শোভরাজ। সেখানে এক মার্কিন এবং এক কানাডিয়ান নাগরিককে হত্যা মামলায় আবার গ্রেফতার হন । নেপালে তার আজীবন কারাদণ্ড হয়। শেষ পর্যন্ত বয়সের কারণে এক পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে মুক্তি দেয়ার আদেশ দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শোভরাজের আইনজীবী রামবন্ধু শর্মা জানান, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকালে তাকে জেল থেকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফ্রান্সে পাঠানোর আগে তাকে কাগজপত্রের জন্য অভিবাসন বিভাগে নেয়া হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শোভরাজের বাবা একজন ভারতীয় এবং মা ভিয়েতনামি।
১৯৭০ থেকে ৮০-র দশকে হত্যাকাণ্ডের জেরে বিশ্বজুড়ে চার্লস শোভরাজের নাম ছড়িয়ে পড়েছিল। সম্প্রতি শোভরাজকে নিয়ে নেটফ্লিক্সে একটি সিরিজ হয়েছে। বিবিসি এবং নেটফ্লিক্সের যৌথ প্রযোজনার ওই সিরিজে শোভরাজের জীবন দেখানো হয়েছে। এর আগে শোভরাজ এবং তার সিরিয়াল কিলিং নিয়ে বইও লেখা হয়েছে।