মুমিনুল হক শেষ অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন বছরের প্রথম টেস্টে। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ঐতিহাসিক প্রথম জয়ের ম্যাচে ৮৮ রান করেছিলেন তৎকালীন টেস্ট অধিনায়ক। এরপরের বাজে ফর্মের কারণে দলে জায়গা হারান। তবে বছরের শেষ টেস্টে দলে ফিরেই নিজেকে ফিরে পেলেন মুমিনুল। ভারতের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে অর্ধশতকের দেখা পেলেন তিনি।
ক্যারিয়ারের শুরুতে ব্রাডম্যানীয় গড়ের কারণে সাড়া জাগিয়েছিলেন মুমিনুল হক। টানা ১১ টেস্টে পেয়েছিলেন ন্যূনতম অর্ধশতক। সেই মুমিনুলের ২০২২ সালটা কাটল বিস্মরণযোগ্য। অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন, জায়গা হারিয়েছেন দলে। ঘরোয়া লিগেও পাচ্ছিলেন না রান। তবে ইয়াসির রাব্বির বাজে ফর্ম তাকে আরেকটা সুযোগ দিয়েছে নতুন করে নিজেকে চেনানোর। আর সুযোগটা পেয়ে কাজেও লাগাচ্ছেন পকেট ডিনামাইট খ্যাত এই বাঁ হাতি ব্যাটার।
চট্টগ্রাম টেস্টের ব্যর্থতায় বাদ পড়েছেন ইয়াসির রাব্বি। ঢাকা টেস্টে দরজাটা খুলে গেছে। পছন্দের তিন নম্বর পজিশনে নেমে আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং উপহার দিচ্ছেন ৩১ বছর বয়সী ব্যাটার। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাকিরা যখন সেট হয়ে উইকেট ছুড়ে আসছেন তখন স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাট করে অর্ধশতক তুলে নিয়ে ছুটছেন তিনি। তাতে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনটা খুব একটা খারাপ কাটছে না বাংলাদেশের।
বছরের প্রথম টেস্টে হাফ সেঞ্চুরির পর শেষ টেস্টেও হাফসেঞ্চুরি করা মুমিনুল অপরাজিত আছেন ৯১ বলে ৫৮ রানে। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ১০টি চারের মারে। এটি টেস্টে তার ১৬তম অর্ধশতক। এ ছাড়া নামের পাশে আছে ১১টি শতক।
মিরপুরে এদিন টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি টাইগার অধিনায়ক। শুরুটাও ভালো ছিল স্বাগতিকদের। জাকির ও শান্ত মিলে ওপেনিং জুটিতে বাংলাদেশকে এনে দেয় ৩৯ রান। কিন্তু এরপরই ঘটে ছন্দপতন। এক যুগ পর ভারতের টেস্ট দলে ফিরে জাকিরকে সাজঘরে ফেরান জয়দেব উনাদকাট।
ইনিংসের ১৪.৫ ওভারে করা তার অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বাউন্স বল জাকিরের ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে থাকা লোকেশ রাহুলের হাতে। অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি করা জাকির এদিন ৩৪ বলে ১৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
পরের ওভারেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। রিভিউ নিয়েও তিনি আম্পায়ারের আউটের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেননি। ৫৭ বল মোকাবিলায় ৩ বাউন্ডারিতে শান্ত ২৪ রান করে মাঠ ছাড়েন।
দুই ওপেনারের বিদায়ের পর মুমিনুল হকের সঙ্গে ভারতীয় বোলারদের ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন সাকিব। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যাট করেছেন স্বাচ্ছন্দ্যেই। কিন্তু বিরতি থেকে ফিরে উমেশ যাদবের শর্ট লেংথের বল মিডঅফের ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে তিনি ক্যাচ উপহার দেন পূজারাকে। বল তালুবন্দি করতে জায়গা থেকে নড়তেও হয়নি ভারতীয় ফিল্ডারকে।
সাকিবের পর মুমিনুলকে সঙ্গ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিকও। মুমিনুল ক্রিজের একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ক্যারিয়ারের ১৬তম ফিফটি তুলে নিলেও মুশফিক আউট হন ২৬ রানে। উনাদকাটের অফ স্টাম্পের বল খোঁচা দিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ উপহার দেন মুশফিক।