যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এরই মধ্যে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে তিনি দেশটির কংগ্রেসে ভাষণ দিয়েছেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরুর পর এটিই জেলেনস্কির প্রথম কোনো বিদেশ সফর। খবর সিএনএনের।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ভাষণে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্র থেকে অব্যাহত আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আপনাদের অর্থ কোনো চ্যারিটি নয়। এটা হচ্ছে বৈশ্বিক গণতন্ত্র ও নিরাপত্তায় বিনিয়োগ।’
ভাষণে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জোরালো করতে কংগ্রেস সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ইউক্রেন তার অখণ্ডতা ধরে রেখেছে এবং কখনোই আত্মসমর্পণ করবে না। আমরা জিতব। কারণ, আমরা ঐক্যবদ্ধ।’
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ শুরুর আগে বাখমুতে অন্তত ৭০ হাজার লোক বাস করত। এখন মাত্র কয়েকজন লোক সেখানে আছে। দোনবাসের প্রচণ্ড যুদ্ধে ওই ভূখণ্ডের প্রতি ইঞ্চি জমি রক্তে ভিজে গেছে। কিন্তু ইউক্রেন দোনবাসকে এখনও ধরে রেখেছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘নৃশংস যুদ্ধ চলা সত্ত্বেও ইউক্রেনবাসী এ বছর বড়দিন উদ্যাপন করবে। বিদ্যুৎ না থাকলেও নিজেদের প্রতি আমাদের বিশ্বাসের আলো নিভে যাবে না। ইউক্রেন নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করবে।
কংগ্রেসে ভাষণ দেয়ার আগে মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করেন। এ ছাড়া, মঞ্চে ওঠার সময় মার্কিন আইনপ্রণেতারা চেয়ার ছেড়ে করতালি দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসকে একটি ইউক্রেনের পতাকা উপহার দিয়েছেন। যেখানে ফ্রন্টলাইনের সেনাদের সই আছে।
এদিকে যুদ্ধকালীন কংগ্রেসে জেলেনস্কির ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন একাধিক মার্কিন আইনপ্রণেতা। সিনেটের নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, জেলেনস্কির ভাষণ ‘অনুপ্রেরণামূলক’।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের মানবিক, আর্থিক ও নিরাপত্তা সহায়তা দিয়েছে। বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় যা অনেক বেশি।
গত বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন পৌঁছান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। রাশিয়া গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর এই প্রথম জেলেনস্কি বিদেশ সফরে গেলেন।