টিকা নেয়ার হার এবং হাইব্রিড ইমিউনিটি কমে যাওয়ার পাশাপাশি চীন সরকার করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জারি করা ‘জিরো কোভিড’ নীতি তুলে নিলে দেশটিতে ১৩ থেকে ২১ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। এ সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বৈজ্ঞানিক তথ্য ও পর্যালোচনা বিষয়ক সংস্থা এয়ারফিনিটি।
বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে বুধবার (২১ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
এয়ারফিনিটির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ‘চীনের মানুষের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কম। এছাড়া দেশটির নাগরিকদের দেশীয়ভাবে উৎপাদিত সিনোভ্যাক এবং সিনোফার্মের টিকা দেয়া হয়েছিল, যার কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে কম এবং সংক্রমণ ও মৃত্যু ঠেকাতে কম সুরক্ষা দেয় বলে প্রমাণিত হয়েছে।’
গ্লোবাল হেলথ ইন্টেলিজেন্স বিষয়ক এ সংস্থাটির মতে, পূর্ববর্তী সংক্রমণের মাধ্যমে চীনের জনসংখ্যা স্বাভাবিকভাবে ইমিউনিটি অর্জন করেনি বললেই চলে।
এয়ারফিনিটি বলছে, ‘আমাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, গেল ফেব্রুয়ারিতে হংকংয়ে সংক্রমণের যে ঢেউ দেখা গেছে, চীনের অবস্থাও যদি একই হয় তাহলে দেশটিতে ১৬ থেকে ২৮ কোটি পর্যন্ত মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে পারে। আর এদের মধ্যে ১৩ থেকে ২১ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।’
এর আগে মহামারি বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এরিক ফিল-ডিং শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চীনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
এরিক ফিল-ডিংয়ের মতে, ‘জনগণের আন্দোলেনের পর চীনের ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এখন লক্ষ্য হলো, যারা আক্রান্ত হতে চায় তাদের আক্রান্ত হতে দাও। কারণ, দ্রুত সংক্রমণ মানে দ্রুত মৃত্যু, দ্রুত মৃত্যু মানে পরিস্থিতি দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো এবং দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর অর্থ হলো দ্রুত সংক্রমণ নিম্নগামী হওয়া। আর দ্রুত নিম্নগামী হওয়া মানে দ্রুত উৎপাদন শুরু হওয়া।’
এদিকে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রাজধানীতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের হার আবারও বেড়েছে। আগে থেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত লোকজনের সৎকারের জন্য নির্ধারিত একটি মর্গ এরই মধ্যে ভর্তি হয়ে গেছে। নতুন কেউ মারা গেলে তার স্থান কোথায় হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।