চীনে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর থেকেই হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। মৃত্যুও হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্যেই দুঃসংবাদ দিয়েছেন মহামারি বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ এরিক ফিল-ডিং। তিনি শঙ্কা ব্যক্ত করেছেন, বর্তমান অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে চীনের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮৫ কোটি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, চীনের বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী তিন মাস অর্থ্যাৎ ৯০ দিনের মধ্যে ৮৫ কোটিরও বেশি মানুষ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হতে পারেন। যার অর্থ হলো বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও বেশি। এরিক ফিল-ডিংয়ের শঙ্কা, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের রাজধানীতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃতের হার আবারও বাড়েছে। আগে থেকেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত লোকজনের সৎকারের জন্য নির্ধারিত একটি মর্গ এরই মধ্যে ভর্তি হয়ে গেছে। নতুন কেউ মারা গেলে তার স্থান কোথায় হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এরিক ফিল-ডিংয়ের মতে, ‘জনগণের আন্দোলেনের পর চীনের ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এখন লক্ষ্য হলো, যারা আক্রান্ত হতে চায় তাদের আক্রান্ত হতে দাও, যারা মরতে চায় তার মরুক। কারণ, দ্রুত সংক্রমণ মানে দ্রুত মৃত্যু, দ্রুত মৃত্যু মানে দ্রুত দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানো এবং দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর অর্থ হলো দ্রুত সংক্রমণ নিম্নগামী হওয়া। আর দ্রুত নিম্নগামী হওয়া মানে দ্রুত উৎপাদন শুরু হওয়া।’
এদিকে, বিধিনিষেধ শিথিলের পর চীনে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েক মাস আগেও প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসা দৈনিক শনাক্ত এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন হাজারে। এ ছাড়া চলতি মাসে দেশটিতে করোনায় কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানা গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানায়, এবারের শীত মৌসুমে চীনে করোনার অন্তত তিনটি ঢেউ আঘাত হানতে পারে।
দেশজুড়ে তীব্র গণবিক্ষোভের মুখে চলতি মাসে করোনার কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নিতে বাধ্য হয় চীন। এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে। শনাক্ত বেড়ে যেতে পারে এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। আর সেই শঙ্কাকে সত্য প্রমাণ করেই যেন দেশটিতে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা।
সূত্র: সময় টিভি