নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্ডারি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে এক সপ্তাহের মধ্যে একটি নতুন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। দেশটির নির্বাচন কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) প্রেসিডেন্ট এ আহ্বান জানান।
গত ২০ নভেম্বর নেপালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সরকার গঠনের জন্য নির্বাচনে কোনো একক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের একজন সদস্যকে ডেকে বলেছেন তিনি সংবিধানের ৭৬ (২) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত দুই বা অন্যান্য দলের সহযোগিতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেন। ২৫ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত এর জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে।
নেপালে সরকার গঠনের জন্য কোনো দল বা জোটের ২৭৫ সদস্যের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভে ১৩৮টি আসন প্রয়োজন। তবে সরকার গঠনের মতো কোনো দলই পর্যাপ্ত আসন পায়নি।
নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বাধীন নেপালি কংগ্রেস (এনসি) ৮৯টি আসন পায়। ক্ষমতাসীন জোটের অন্যান্য মিত্ররা পায় ৪৭টি আসন। হাউসে ক্ষমতাসীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতার কাছাকাছি আসন পেলেও নতুন সরকার গঠনের জন্য এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
নেপালে রক্তক্ষয়ী মাওবাদী বিদ্রোহের সমাপ্তির পর একটি নতুন রাজনৈতিক শৃঙ্খলার সূচনা করে ২০১৫ সালে একটি নতুন সংবিধান জারি হওয়ার পর গত নভেম্বরে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন হয়।
দেশটিতে ২০০৬ সালে গৃহযুদ্ধ শেষ হয়েছিল, এতে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করা হয় এবং এতে দেশের রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটে, পাশাপাশি সাবেক বিদ্রোহীদের সরকারি কার্যক্রমে যুক্ত করা হয়।
সেই থেকে সাবেক গেরিলারা অন্যান্য কমিউনিস্ট পার্টি এবং প্রতিষ্ঠিত কংগ্রেসের সঙ্গে বিভিন্ন জোটে ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নেপালের সংসদের একটি পুনরাবৃত্তির বৈশিষ্ট্য হয়েছে এবং যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে কোনো প্রধানমন্ত্রী পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেননি।
নেপালের দুই প্রতিবেশী চীন ও ভারতের মধ্যে ঐতিহ্যগত প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সমন্বয় করার জন্য বিভিন্নভাবে সরকারকে ভারসাম্যমূলক আইন তৈরিতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অন্যদিকে দেশটিতে চীনা অর্থায়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে পশ্চিমা উদ্বেগ বাড়ছে।