সুনামগঞ্জের ধোপাজান-চলতি নদী থেকে বালুমহাল ইজারা ও বালু-পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট নদীর তলদেশ ও তীর কেটে বালু-পাথর উত্তোলন করায় ভাঙনে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পাশাপাশি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ পড়েছে হুমকির মুখে।
সরেজমিন দেখা যায়, ছোট নৌকায় ড্রেজার বসিয়ে চলছে বালি পাথর উত্তোলন। সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কাইয়ারগাঁও আদাং ডলুরা এলাকার ধোপাজান-চলতি নদীর তলদেশ ও তীর খনন করে অবৈধভাবে বালি-পাথর উত্তোলন করে মজুত করছেন শ্রমিকরা।
ছোট-বড় নৌকা বোঝাই করে বালি-পাথর নেয়া হচ্ছে নানা গন্তব্যে। অপরিকল্পিতভাবে বালি-পাথর উত্তোলনে সদরসহ আশপাশের ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের নদীতীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। আর হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রভাবশালী সিন্ডিকেট অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করে মজুত করছে।
বালু উত্তোলনকারী শ্রমিকরা বলেন, সারা দিনে এক ট্রিপ পাথর তুলতে পারি। যে টাকা বিক্রি করি তার অর্ধেক চলে যায় মালিকের হাতে, আমাদের হাতেও টাকা থাকে না।
এলাকাবাসী বলছেন, রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে। এলাকায় চলাচলের রাস্তাগুলো নদীভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। আরেকবার বন্যা এলে বাড়িঘর সব ভেঙে নিয়ে যাবে।
অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলন কর্মীরা। আর এতে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান জনপ্রতিনিধি।
পরিবেশ আন্দোলন কর্মী তারেক রহমান বলেন, ‘অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনের ফলে মানুষের বাড়িঘর, গাছপালা নষ্ট হচ্ছে। ট্রলারের শব্দে মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না।
সলুকাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী তপন বলেন, ‘অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনে প্রায় ৮০ কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, ‘অবৈধভাবে দেশের খনিজ সম্পদ যাতে কেউ উত্তোলন করতে না পারে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা সে বিষয়ে তৎপর রয়েছে।’
১২১ হেক্টর আয়তনের ধোপাজান বালুমহালটির ইজারা চার বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। যার সবশেষ ইজারা মূল্য ছিল ৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।