ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, রাজধানীতে দুই কোটি মানুষের বসবাস। সেই দুই কোটি মানুষের শান্তিতে বিঘ্ন ঘটালে পুলিশ কি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে?
শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘মহান বিজয় দিবস ২০২২’ উপলক্ষে বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। ঢাকায় বসবাসরত ২ কোটি লোকের শান্তিতে বিঘ্ন সৃষ্টি করবেন, পুলিশ কি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে- এমন প্রশ্ন রেখে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, জাতির সব ক্রান্তিকালে ডিএমপি সবসময় জাতির পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
আপনারা যেভাবে একাত্তরে বুকের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করেছেন, আপনাদের পরবর্তী প্রজন্ম তারাও জাতির সব ক্রান্তিলগ্নে জাতির পাশে ছিল। ২০১২-১৩ সালে অগ্নিসন্ত্রাসীরা পুলিশকে পুড়িয়ে মেরেছিল। কিন্তু পুলিশ দমে যায়নি, মনোবল হারায়নি। ২০১৫-১৬ সালে জঙ্গিবাদের সময় অনেক পুলিশ সদস্য মারা গেছেন।
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা হেরে যাইনি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পুলিশ জয়ী হয়েছে। পুলিশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যে পুলিশের সূচনা ১৯৭১ সালে আপনারা করে দিয়েছিলেন ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রেখেছিলেন, জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন অনেকেই।
সেই পুলিশের সদস্য হিসেবে গর্ব করে বলতে পারি যে, ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক আপনাদের সেই ধারাবাহিকতা ১৯৭১-২০২২ পর্যন্ত ধরে রেখেছি। তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে পুলিশ যেমন জীবন দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য, বিজয়ের জন্য যুদ্ধ করেছেন, আমরাও পরবর্তীতে বাঙালি জাতির জন্য সব ক্রাইসিস মোমেন্টে পাশে ছিলাম।
অগ্নিসন্ত্রাসীদের যেমন আশ্রয়-প্রশ্রয় দেইনি, তেমন জঙ্গিবাদকেও আশ্রয়-প্রশ্রয় দেইনি। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে যদি কেউ ছিনিমিনি খেলতে চায়, বাংলাদেশ পুলিশ তা হতে দেবে না। ডিএমপি কমিশনার বলেন, কয়েকবছর ধরে অনেক চেষ্টা করেছে, তারা পারেনি। আবার তারা নতুন খেলায় মেতে উঠেছে। নতুন খেলায় তাদের সফল হতে দেব না।
পুলিশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে কমিশনার আরও বলেন, ‘আপনারা এ বয়সেও লাঠি হাতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। আমাদের সহকর্মীদের শরীরে টগবগে রক্ত, তারা কেন পারবে না? আপনাদের সাহসে এ তরুণ পুলিশ সদস্যরাই এ দেশকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত রাখবে ইনশাআল্লাহ।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) সৈয়দ নুরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, উপপুলিশ কমিশনারসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।